কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু সড়ক, যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তিন দিন আগে আপনার ভাই সাহাদাত বাড়ির সামনে চকলেট বোমা কত গুলো রেখে একটা নাটক সাজিয়েছে। তাকে নাকি বোমা মেরে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আপনার ভাই সাহাদাত এমন কেউ নয় যে তাকে বোমা মেরে মারতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) রাত ১০টায় ওবায়দুল কাদেরের ভাগ্নে মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু নিজের ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, এখন আবার আপনার ভাইয়ের কর্মীরা এবং বাহির থেকে আনা সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণের কথা বলে একটা গুজব রটাচ্ছে। এটা কি হেড মাস্টার মোশারেফ সাহেবের বাড়ি, এটা কি ওবায়দুল কাদের সাহেবদের বাড়ি, নাকি এটা সন্ত্রাসীদের বাড়ি। আমি আপনাকে প্রশ্ন করতে চাই- আপনাদের বাড়ির ঘাটলায়, আপনাদের বাড়ির ভিতরে, আপনাদের সামনে, আপনার বাড়ির পিছনে, আপনার ভাইয়ের অফিসের পিছনে বোমা বানায় কিভাবে সন্ত্রাসীরা? কোম্পানীগঞ্জ কি আপনাদেরকে ইজারা দেওয়া হয়েছে?
মঞ্জু কাদের মির্জাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কাকে হুমকি দিচ্ছেন। কোম্পানীগঞ্জকে শান্ত করতে হলে আপনাকে কোম্পানীগঞ্জ থেকে বিতাড়িত করতে হবে। কিসের শান্তির বার্তা দিচ্ছেন আপনি। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন নেতাকর্মীর শরীরে এক ফোটা রক্ত থাকতে আপনার সাথে কোনও বৈঠক হবে না। আমাদের আর একটা কর্মীর গায়ে যদি আঘাত পড়ে আবদুল কাদের মির্জাকে পৌরসভা থেকে নিয়ে আসব। আমাদের ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়েন না। বহু ধৈর্য ধরছি আমরা, ভদ্রতা অনেক দেখিয়েছি। অনেক সম্মান দেখিয়েছি।
সেতুমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি দেখতে দেখতে চার মাস দেখেছেন। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দুইজন কর্মী জীবন দিয়েছে। আওয়ামী লীগের সভাপতি লাঞ্ছিত হয়েছে, সাধারণ সম্পাদক আজকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তার দু’টি হাঁটু বিকল করে দেয়া হয়েছে। আপনি বসে বসে খেলা দেখছেন। কিসের খেলা দেখছেন। আপনি কি আমাদের ধৈর্য পরীক্ষা নিচ্ছেন। শরীরের সব রক্ত চলে গেলেও কোম্পানীগঞ্জে আপনার ভাই আবদুল কাদের মির্জা ও সাহাদাত এবং আপনার ভাতিজা তাশিককে এখানে অপরাজনীতি করে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে দেয়া হবে না। এটা স্পষ্ট ভাষায় আপনাকে বলে দিচ্ছি। আপনি ব্যবস্থা নেন। না হলে এর শেষ পরিণতির জন্য আপনি দায়ী থাকবেন।
সেতুমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, কোম্পানীগঞ্জে যে দু’টি হত্যাকাণ্ড হয়েছে আজ পর্যন্ত আপনি আপনার ভাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি। তার মানে হচ্ছে এ হত্যার দায় আপনিও এড়াতে পারেন না। আপনার এসব ডুয়েল স্ট্যান্টবাজি বন্ধ করেন। এর দায় আপনি এড়াতে পারেন না। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হলে আপনি পদত্যাগ করেন। কাদের মির্জার ছেলে শিবচরে ইলেকশন করতে গিয়ে সাংসদের গাড়ির স্টিকার লাগিয়ে ধরা পড়ে। পরে মন্ত্রী তাকে ফোন দিয়ে রক্ষা করে। ঘটনাটি কোম্পানীগঞ্জের মানুষ একটু জানতে চায়। নিজের ভাই এবং তার ছেলেকে সামলান। কোম্পানীগঞ্জের মানুষকে জিম্মি করে অর্থের পাহাড় গড়ে তুলেছে। আপনার ভাই রক্ত পিপাসু নরপিশাচ ফেসবুকে লাইভে এসে ঘোষণা দিয়েছে সে লাশ ফেলবে। ভাইয়ের কারণে আপনার সম্মান গেছে। এসব নোংরা খেলা বন্ধ করুন। একবার ভাইয়ের পক্ষে, একবার আওয়ামী লীগের পক্ষে। এসব করে কোম্পানীগঞ্জ ও নোয়াখালীর আওয়ামী লীগকে জাহান্নাম বানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, কাদের মির্জা একজন কুলাঙ্গার, তাকে নিয়ে কথাও বলতে চাই না। এ কুলাঙ্গার আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করে এখন ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে কথা বলে, আওয়ামী লীগ নিয়ে কথা বলে। আপনাকে আগামীকাল (শুক্রবার) পর্যন্ত সময় দিলাম। এসব ইঁদুর বিড়াল খেলা বন্ধ করেন। যদি বন্ধ না করেন তাহলে পরদিন থেকে কোম্পানীগঞ্জে লাগাতার আইন অমান্য আন্দোলন চলবে। সে আন্দোলন আপনি রুখতে পারবেন না। আপনাকে অনুরোধ করলাম, পবিত্র রমজান মাসে কোম্পানীগঞ্জের মানুষকে যে জিম্মি দশায় আছে, তা থেকে মুক্তি দিন। আপনি (ওবায়দুল কাদের) এসে দেখেন। আপনার ভাইয়ের সন্ত্রসীদের কারণে বসুরহাট বাজারে মানুষ ওঠে না। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আপনার ভাইয়ের সমস্যার সমাধান করতে না পারেন পদত্যাগ করেন। আপনার কারণে শুধু নোয়াখালীর আওয়ামী লীগ নয়, সারাদেশের আওয়ামী লীগ বিতর্কিত হচ্ছে।