ময়মনসিংহের ফুলপুরে বাম্পার ফলনের পরও কিছু কিছু স্থানে রবিবার বিকালে হঠাৎ দমকা হাওয়া ও একটি গরম বাতাসে উড়িয়ে নিল কৃষকের স্বপ্ন। বিশেষ করে ব্রি-২৬ ও ২৮ ধানের শীষ মরে সাদা হয়ে গেছে। ওই ধান গাছে কোনো চাল নেই। সব চিটা হয়ে গেছে। মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার রহিমগঞ্জ ইউনিয়নের ধীতপুর ও মাটিচাপুর গ্রামে সরেজমিন ধান ক্ষেত পরিদর্শনে গেলে বিশাল মাঠের মধ্যে ব্রি ২৬ ও ২৮ ধান ক্ষেতে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে।
এসময় স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা হয়। ধীতপুর গ্রামের জালাল উদ্দিন (৬৫) নামে একজন কৃষক বলেন, ‘আমরার ক্ষেতো হিজা বাইরইতাছে আর মরতাছে। সব ধান সাদা অইয়া যাইতাছে।’ কথা বলার সময় তার চোখ ছলছল করে উঠে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরার বিলও মইরা গেছে। এই ক্ষেত নিয়া যে স্বপ্ন ছিল সব ভাইঙা চুইরা গেছে।’
কৃষক নুরুল হক বলেন, ‘অহনও মটর ভাড়া দেই নাই। এদিকে দোহান পাটে বাকি। সার, তেল, কীটনাশক বাহিতে আনছি। অহন এইগুলো কেমনে পরিশোধ করবাম?’
স্থানীয়রা বলেন, এতদিন ক্ষেত ভালই ছিল। রবিবার বিকালে হঠাৎ গরম একটা বাতাস আসে। এর পরদিন থেকে ক্ষেতের এ অবস্থা হয়। এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সামিরা আক্তার বলেন, এটা কোন রোগ নয় বরং এটা একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বিশেষ করে ব্রি ২৬ ও ২৮ ধানের উপর দিয়ে এ দুর্যোগ বয়ে গেছে। রবিবার যে একটা গরম বাতাস ও দমকা হাওয়া বয়ে গিয়েছিল উহা ওই ধানগুলো সহ্য করতে পারেনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুনও একই কথা বলেন। তিনি বলেন, এটা শুধু আমাদের ফুলপুরে নয় দেশের অন্যান্য স্থানেও এ ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। পুরাতন জাতগুলো বিশেষ করে ব্রি ২৬ ও ২৮ ধানটা খুবই সেন্সেটিভ। ওই ধানগুলো রবিবারের গরম ও দমকা হাওয়াটা সহ্য করতে না পেরে এ অবস্থা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলার ১০ ইউনিয়নের মধ্যে আনুমানিক ১৫ হেক্টর জমি এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে রহিমগঞ্জের কৃষকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।