শীতের শুষ্কতা শেষ, আসছে ঘাম ঝরা দিন

শীতের শুষ্কতা শেষ, আসছে গরমে ঘাম ঝরানোর দিন। দেশের কোথাও শৈত্যপ্রবাহ নেই। নেই কুয়াশা। শৈত্যপ্রবাহের বদলে দেখা দিয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা। মাঘের এ সময়েই চার দিকে বসন্তের হাওয়া। গত বছরের ঠিক এ সময়েই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে শৈত্যপ্রবাহে কাঁপন ধরার মতো ঠাণ্ডা বিরাজ করলেও এবার সে রকম পরিস্থিতি নেই। বদলে গেছে পরিবেশ।

হঠাৎ এ পরিস্থিতির কারণ জানতে চাইলে আবহাওয়া অফিস জানায়, অনেক কারণ রয়েছে এ সময়ে ঠাণ্ডা কমে যাওয়ার। অন্যতম দু’টি কারণের একটি হলো বিষুবীয় ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সক্রিয় রয়েছে। লঘুচাপের কারণে ঠাণ্ডা বাতাস এই এলাকায় প্রবেশ করতে পারছে না।

অন্য আরেকটি কারণ হলো উপমহাদেশীয় উচ্চ বলয় নামে যে উচ্চ চাপ এ সময়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত বিরাজ করত তা নেই। এ প্রক্রিয়াটি ঠাণ্ডা নিয়ে আসে বাংলাদেশে। এমনকি এ প্রক্রিয়াটি ভারতের বিহার রাজ্য পর্যন্ত অবস্থান করলেও বাংলাদেশে কিছু ঠাণ্ডা পড়ে থাকে।

গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রংপুর বিভাগের শ্রীমঙ্গল ও রাজারহাটে ১১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ ছিল সীতাকুণ্ডে ৩১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, সাতক্ষীরা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গাসহ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ছিল। এ বছর দেশের কোথাও শৈত্যপ্রবাহ নেই।

এর পরিবর্তে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে হালকা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী দুই দিন সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। অবশ্য বৃষ্টি থেমে গেলে তাপমাত্রা সাময়িকভাবে হ্রাস পাওয়ার কিছুটা সম্ভাবনা আছে। তবে তা সাময়িক। এরপরই গরমের পালা এবং এটি চলতেই থাকবে।

অবশ্য বাংলাদেশে কিংবা দক্ষিণ এশিয় দেশগুলোতে দ্রুত শীত বিদায় নেয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও ইউরোপ-আমেরিকায় বিপরীত অবস্থা বিরাজ করছে। সেখানে নতুন করে তুষারপাত শুরু হয়েছে।

জলবায়ু গবেষকেরা এটাকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বলে মনে করছেন। বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে পরিবেশে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে এর ফলে এমনটা হচ্ছে বলে মনে করেন তারা। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বেশি খারাপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে বলে জানান বিশিষ্ট জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত। তিনি বুয়েটের একটি সেমিনারে প্রমাণ দিয়ে দেখান যে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে অসময়ে অনেক ফুল ফুটছে। তিনি জানান, যে কদম ফুল বর্ষায় ফোটে তা বাংলাদেশের কোনো কোনো অঞ্চলে অক্টোবরে ফুটেছে বলে তিনি নিজে দেখেছেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top