ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সরকারকে হটাতে কলকাতার ঐতিহাসিক ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে মহাসমাবেশের আয়োজন করেছে। শনিবারের এই সমাবেশে ভারতের প্রায় ২২টি আঞ্চলিক এবং কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে।
ঐক্যবদ্ধ বিরোধী সমাবেশ শিরোনামে এই মহাসমাবেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে ‘বঙ্গ বাঘিনী’ উপাধি দিয়েছেন দেশটির ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিদ্রোহী নেতা অরুণ শৌরি। মমতাকে বঙ্গ বাঘিনী আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘বিজেপিকে হটাতে ডাক দিয়েছেন বঙ্গ বাঘিনী। আমি নিশ্চিত, তার এই আহ্বান সফল হবে।
কলকাতায় বিজেপিবিরোধী এই সমাবেশে অংশ নিয়েছেন কর্ণাটকের জনতা দলের (সেক্যুলার) নেতা ও মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমার স্বামী, জম্মু-কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের নেতা ফারুক আবদুল্লাহ, ওমর আবদুল্লাহ, কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে ও লোকসভার সদস্য অভিষেক মনু সিংভি।
এছাড়াও কর্ণাটকের জনতা দলের নেতা ও ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়া, উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও সমাজবাদী দলের নেতা অখিলেশ যাদব, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও তেলেগু দেশম দলের নেতা চন্দ্রবাবু নাইডু, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল, বিহারের লোকতান্ত্রিক জনতা দলের নেতা শারদ যাদব, বিহারের রাষ্ট্রীয় জনতা দলের অন্যতম নেতা তেজস্বী যাদব, তামিলনাড়ুর জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির নেতা শারদ পাওয়ার, ডিএমকে দলের নেতা এমকে স্টালিন, ভারতের সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপির বিদ্রোহী নেতা যশোবন্ত সিনহা, শত্রুঘ্ন সিনহা ও অরুণ শৌরি, ঝাড়খন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ঝাড়খন্ড বিকাশ মোর্চার নেতা বাবুলাল মারান্ডি, অরুণাচলের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী গেগং আপাং, শিবসেনার সাংসদ সঞ্জয় রাউত, বহুজন সমাজপার্টির নেতা সতীশ মিশ্র। দেশটির নিচু বর্ণ প্যাটেল সম্প্রদায়ের আন্দোলনের জনপ্রিয় মুখ ও নেতা হার্দিক প্যাটেল, জিগনেশ মেভানিও অংশ নিয়েছেন মোদিবিরোধী এই সমাবেশে।
বিজেপির বিদ্রোহী নেতা অরুণ শৌরি বলেন, বিজেপিকে হটাতে দ্বিতীয় কোনো মতামতের দরকার নেই। কলকাতার প্যারেড গ্রাউন্ডের এই সমাবেশকে অনেকেই দেখছেন চলতি বছরের নির্বাচনে বিজেপি ও মোদির বিরুদ্ধে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মমতার লড়াইয়ের আভাস হিসেবে।
এদিকে কলকাতায় মমতার নেতৃত্বাধীন এই মহাসমাবেশে সমর্থন জানিয়েছেন দেশটির বিরোধী দল কংগ্রেসের প্রধান রাহুল গান্ধী। এক চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে দিদি সম্বোধন করে রাহুল লিখেছেন, বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বার্তা দেয়ার সময় এসেছে। রাজ্য তৃণমূলের দাবি, শনিবারের সমাবেশে কয়েক লাখ মানুষ যোগ দিয়েছে।
মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, ঐক্যবদ্ধ বিরোধী শিবিরের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সেটা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার সময় এখন নয়। প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সেটা আমরা নির্বাচনের পর ঠিক করবো। এখন সময়ের যেটা দাবি সেটা হচ্ছে মোদি এবং বিজেপিকে হটানো।
তৃণমূল কংগ্রেসের এই নেত্রী বলেন, কয়েক বছর ধরে লুটপাট করে বিজেপি আসলে পিছিয়ে গেছে। তারা যেমন প্রতিশ্রুতিই করুক না কেন তাদের আচ্ছে দিন আর আসবে না।
জম্মু-কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের নেতা ফারুক আবদুল্লাহ বলেন, দেশে ধর্মের নামে বিভেদ চলছে। সবার আগে নেতাদের একজোট হতে হবে। দেশরক্ষায় আত্মত্যাগ প্রয়োজন। ইভিএম চোর মেশিন। দুনিয়াতে কোথাও এই মেশিন নেই। এই মেশিনের দিন শেষ হোক।