সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন করে ১৩ হাজার ১ শ’ ‘সহকারী শিক্ষক’ নিয়োগ পরীক্ষা আগামী ১৫ মার্চ থেকে শুরু হবে। ওই আসনের বিপরীতে সারা দেশে আবেদন করেছেন রেকর্ড সংখ্যক ২৪ লাখের বেশি প্রার্থী। তাই সারা দেশে পর্যায়ক্রমে এবং চার-পাঁচে ধাপে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি পরীক্ষার কারণে ওই নিয়োগ পরীক্ষা পিছিয়ে ১৫ মার্চ করা হয়েছে।
পরীক্ষার সময়সূচি, ওএমআর ফরম ডিজাইন ও পরীক্ষার্থীদের আসন বণ্টন, প্রশ্ন বণ্টন, পরীক্ষা খাতা মূল্যায়ন, ফল প্রকাশসহ সব কার্যক্রম বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তৈরি করা বিশেষ সফটওয়ার দিয়ে পরিচালিত হবে। বুয়েটের তৈরি করা নতুন এ সফটওয়ার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদন করেছে।
গত পরশু মন্ত্রণালয়ে ওই নিয়োগ কমিটির বৈঠকে পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ এবং বুয়েটের সফটওয়ারের অনুমোদন দেয়া হয়। এবারো আগের মতোই লিখিত ও মৌখিক দুই ধাপে পরীক্ষা নিয়ে চূড়ান্ত নিয়োগপ্রাপ্তদের বাছাই করা হবে। আগের নিয়ম অনুযায়ী এমসিকিউ পদ্ধতির লিখিত পরীক্ষা ৮০ নম্বর ও ভাইভায় ২০ নম্বর থাকবে। এ ছাড়া পরীক্ষাপদ্ধতি, প্রশ্নের ধরন, ফল প্রকাশের আগের ধারা পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস রোধে প্রশ্নে সংখ্যা হবে ৮-১০ সেট বা তারও বেশি, একেক জেলায় ও একেক ধাপের পরীক্ষার প্রশ্নের সাথে অন্য জেলার ও ধাপের পরীক্ষার প্রশ্নের মিল হবে না। নির্ধারিত প্রশ্নের সেট পরীক্ষার দিন সকালে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে ছাপানো হবে এবং কেন্দ্রে পাঠানো হবে। যে ধাপে ও যেসব জেলার পরীক্ষা শেষ হবে সেসব ধাপের ও জেলার পরীক্ষার ফল-পরবর্তী নির্ধারিত দিনেই প্রকাশ ও আগেই মৌখিক পরীক্ষা আয়োজন করে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে। ওই সব জেলায় নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু হবে।
পরীক্ষা গ্রহণের পদ্ধতি ও প্রার্থীদের আসনবিন্যাসেও পরিবর্তন আনা হবে এবারের নিয়োগ পরীক্ষায়। পাশাপাশি বসা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যাতে একই সেট না পড়ে সে জন্য এবার ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রার্থীদের প্রশ্ন সেট নির্ধারণ করা হবে। পরীক্ষার্থীর রোল নম্বরের ওপর প্রশ্ন-সেট নির্ধারণ করা হবে। এবার পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শক নিয়োগের ক্ষমতা কেন্দ্র সুপারের কাছে থাকবে না। এক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষককে অন্য প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব দেয়া হবে। বুয়েটের সফটও্যায়ারের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীর সিট-বিন্যাস, পরিদর্শক নির্বাচনসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্র বলছে, ১৩ হাজার ১ শ’ ‘সহকারী শিক্ষক’ নিয়োগের জন্য বিদায়ী বছরের (২০১৮) ১ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন কার্যক্রম শেষ হয়। এ সময়ের মধ্যে ২৪ লাখের বেশি আবেদন জমা হয়েছে। তার মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৪ লাখ ৫২ হাজার ৭৬০টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৩৩৫টি, রাজশাহী বিভাগে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৯২৫টি, খুলনা বিভাগে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৭৩০টি, বরিশাল বিভাগে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৮২৭টি, সিলেট বিভাগে ১ লাখ ২০ হাজার ৬২৩টি, রংপুর বিভাগে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৩৬৮টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২ লাখ ৮২ হাজার ৪৩৭টি আবেদন জমা হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রার্থীরা www.dpe.teletalk.admit ওয়েবসাইট থেকে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। ওএমআর শিট পূরণের নির্দেশাবলি এবং পরীক্ষাসংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য ওয়েবসাইটে (www.dpe.gov.bd) পাওয়া যাবে।