ময়মনসিংহের ধোবাউড়া বাজারের দর্শা রোডে গত ০৮/০৭/২০২০ ইং তারিখ সন্ধ্যায় রফিকুল ইসলামের বাসা সংলগ্ন জলাশয়ে ফরিদা খাতুন (৩৪) এর লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে ধোবাউড়া থানা পুলিশ ও পিবিআই দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। থানা পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে প্রেরণ করে। উক্ত ঘটনায় ধোবাউড়া থানায় মামলা নং-০৮, তাং-১৬/০৭/২০২০ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ দঃ বিঃ রুজু হয়। থানা পুলিশ কর্তৃক তদন্তাধীন অবস্থায় পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা গত ২৩/০৮/২০২০ খ্রিঃ স্ব-উদ্যোগে মামলাটি অধিগ্রহণ করে মামলার তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) জনাব মোঃ দেলোয়ার হোসাইন ঘটনার পরপরই পলাতক ডিসিস্টের স্বামী আসামী ছায়াদুল খান @ সাইদুলকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে একের পর এক অভিযান পরিচালনা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে আসামী সাইদুল রাঙ্গামাটি জেলার লংদু থানা কর্তৃক আটক হওয়ার খবর পেয়ে তাকে অত্র মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ০৩ দিনের পুলিশ রিমান্ড আনা হয় এবং পুলিশ সুপার জানাব গৌতম কুমার বিশ্বাস এর নির্দেশনায় ও তত্ত্বাবধানে তাকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসামী সাইদুল তার স্ত্রী ফরিদা খাতুনকে হত্যার কথা স্বীকার করে।
জানা যায় ডিসিস্ট ফরিদা খাতুনের স্বামী রাস্তা নির্মাণ শ্রমিক। সে স্ত্রী, ছেলে মেয়ে নিয়ে ধোবাউড়ার দর্শা রোডে জনৈক রফিকুল ইসলাম এর বাসায় ভাড়া থাকত। সেখানে বসবাস কালীন সময়ে ডিসিস্ট ফরিদা খাতুন উক্ত বাসার অপর ভাড়াটিয়া জিয়াউর রহমানের সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ফরিদা খাতুনের সাথে জিয়াউর রহমানের অন্তরঙ্গতার বিষয়টি ফরিদা খাতুনের স্বামী জানতে পেরে সে বাধা প্রদান করে। ফরিদা খাতুন তার স্বামীর কথায় কর্ণপাত না করে সম্পর্ক চালিয়ে যেতে থাকে। গত ০৭/০৭/২০২০ খ্রিঃ রাতের বেলা আসামী সাইদুল ও তার স্ত্রী ফরিদা খাতুন এর মধ্যে পরকীয়া প্রেমের বিষয়কে কেন্দ্র করে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে আসামী সাইদুল তার স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করে মেরে বাড়ীর পাশে থাকা গভীর জলাশয়ে ফেলে দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসামী সাইদুলকে অদ্য ০১/০২/২০২০ খ্রিঃ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করলে সে ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারায় নিজেকে জড়িয়ে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। উদঘাটিত হয় চাঞ্চল্যকর ফরিদা খাতুন হত্যা মামলার মূল রহস্য। অবসান হয় সকল জল্পনা কল্পনার।
উল্লেখ্য তাকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সে রাঙ্গামাটি জেলার লংগদু থানা এলাকায় একই কায়দায় তার তৃতীয় স্ত্রীকে হত্যা করে বলে স্বীকার করে।