আফগানিস্তানে শান্তি আলোচনায় নয়া শর্ত রাখল আমেরিকা। এতদিন ধরে মার্কিন সেনাদের সরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল তালেবান। কিন্তু তেমন কোনো ইচ্ছাই নেই মার্কিন প্রশাসনের। বরং শান্তি আলোচনায় আফগানিস্তানে সামরিক ঘাঁটি রেখে দেয়ারই দাবি জানাল আমেরিকা।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এর বদলে সেদেশের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনে প্রচুর অর্থ সাহায্য করার প্রস্তাব দিয়েছে তারা। আফগানিস্তানে শান্তি স্থাপনে নিযুক্ত মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি জালমি খলিলজাদ তালিবানের সঙ্গে আলোচনায় বসার পরই খবরটি প্রকাশিত হয়েছে। ১৭ বছর ধরে চলা যুদ্ধ শেষে গত কয়েক মাস ধরে তালিবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসার উদ্যোগ নিয়েছে আমেরিকা। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, রাশিয়া ও ইরান এই আলোচনার শরিক হয়েছে আগেই।
সম্প্রতি আবু ধাবিতে হওয়া বৈঠকে আগের দাবি থেকে সরে এসে আমেরিকার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় আগ্রহ দেখিয়েছে তালেবানও। পাল্টা তালেবানের কাছে আফগানিস্তানের মাটি থেকে অন্য দেশে হামলা করা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে আমেরিকা। সামরিক ঘাঁটিগুলো রাখার শর্তে আমেরিকা যে অনড়, তা জানিয়েছেন বৈঠকে উপস্থিত এক শীর্ষ কর্মকর্তা। বলাই বাহুল্য, এই শর্তে বিপদের ভয় পাচ্ছে রাশিয়া-চীন।
কয়েক মাস আগেই পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে চিঠি দিয়ে তালিবানের সঙ্গে বৈঠকে মধ্যস্থতা করার আর্জি জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাশাপাশি, বন্ধু দেশ সৌদি ও আমিরাতকে দিয়ে তালিবানের উপর চাপও বাড়িয়েছে আমেরিকা। মধ্য এশিয়ায় শান্তি বজায় রাখার জন্যই আফগানিস্তানে সামরিক ঘাঁটিগুলো রাখতে চাইছে তারা। পাশাপাশি, সেদেশে যাতে আর কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে সেদিকটিও নিশ্চিত করবে মার্কিন প্রশাসন।
এদিকে, আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা ঘাঁটিগুলো রেখে দেয়ার সিদ্ধান্তে অস্বস্তি বেড়েছে রাশিয়া, ইরান ও চীনের। আমেরিকা ওই ঘাঁটিগুলো ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিজেদের প্রভাব আরো বাড়াতে পারে বলেই ভয় পাচ্ছে তারা। এই তিনটি দেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সখ্য কারোরই অজানা নয়। আমেরিকার শর্ত নিয়ে তাই আগ বাড়িয়ে সমর্থন জানাচ্ছে না পাকিস্তান প্রশাসন। বরং মার্কিন-আফগান শান্তি চুক্তিতে অন্য দেশগুলোর সম্মতি আসার অপেক্ষা করছে তারা।