বাংলাদেশের ময়মনসিংহ মহানগরীতে রেডিও তেহরানের শ্রোতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগের সিনিয়র সাংবাদিক মুহাম্মদ আশরাফুর রহমান।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হয়ে দিনভর চলে এই অনুষ্ঠান। কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোঃ শাহাদত হোসেনের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বদেশ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও দৈনিক আজকের খবর পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক শামসুদ্দোহা মাসুম এবং জাতীয় পরিবেশ মানবাধিকার সোসাইটির ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি ও অভিনতা শহীদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব সঞ্চালনা করেন শাইরা হোসেন ম এবং শাদমান হোসেন অয়ন। দ্বিতীয় পর্ব সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশে রেডিও তেহরানের নবনিযুক্ত মনিটর ও টাঙ্গাইল দর্পন সম্পাদক আবু তাহের।
মতবিনিময় সভায় ইরান থেকে ভিডিও বার্তা প্রেরণ করেন বাংলা বিভাগের পরিচালক মুজতাবা ইব্রাহিমি। এতে তিনি বলেন, রেডিও তেহরান ইরানের একমাত্র গণমাধ্যম যা গত ৪০ বছর ধরে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করে সুখ্যাতি অর্জন করেছে। অনুষ্ঠান প্রচার করতে গিয়ে আমরা সীমিত সাধ্যের মধ্যে আমাদের শ্রোতা ও অনলাইন পাঠকদের চাহিদা বিবেচনা করার চেষ্টা করেছি।
তিনি আরও বলেন, ইরান ও বাংলাদেশের মানুষ প্রায় অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহন করছে। দুটি মুসলিম দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে রেডিও তেহরান সর্বোত্তম প্লাটফরম।
এসময় তিনি রেডিও তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য শ্রোতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য মুহাম্মদ আশরাফুর রহমান বলেন, রেডিও তেহরান সংবাদ প্রচারে এক মাইলফলক সৃষ্টি করেছে। পশ্চিমা হলুদ সাংবাদিকতা মোকাবেলায় সঠিক, বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সংবাদ প্রচার করে এ বেতার শ্রোতা ও পাঠকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় রেডিও তেহরানের খবর গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশিত হয়। আইআরআইবি বিশ্ব কার্যক্রমের অর্ধশতাধিক ওয়েবসাইটের মধ্যে বাংলা ভাষার ওয়েবসাইট হিটের দিক থেকে শীর্ষে অবস্থান করছে বলে তিনি জানান।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে শ্রোতাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পূরণ বিশেষকরে শ্রবণমান উন্নত করার বিষয়টি রেডিও তেহরান কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরার প্রতিশ্রুতি দেন।
বিশেষ অতিথি শামসুদ্দোহা মাসুম বলেন, বর্তমান পরাশক্তিগুলোর মোকাবেলায় ইরান সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে। সারাবিশ্বের যেখানেই মুসলমানরা নির্যাতিত হচ্ছে সেখানেই ইরান তাদের পক্ষে বলিষ্ঠ অবস্থান নিচ্ছে।
তিনি বলেন, ইরানের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম অনেক শক্তিশালী এবং ইসলামী অনুশাসনের মধ্যে থেকেও একটি দেশ কিভাবে সুসভ্য ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে অগ্রসরমান থাকতে পারে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে ইরান। তিনি ইরানের সংস্কৃতি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য মোঃ শাহাদত হোসেন বলেন, রেডিও তেহরান একটি বিপ্লবের নাম। অন্যান্য বেতার শ্রোতাদের জন্য যা পারেনি রেডিও তেহরান তা করছে। এসময় তিনি ঢাকায় প্রতিবছর শ্রোতা সম্মেলন ও শর্টওয়েভের শ্রবণমান উন্নত করার আহ্বান জানান।
শ্রোতাদের এ মিলনমেলায় ভারত থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন রেডিও তেহরানের মনিটর এস এম নাজিমউদ্দিন, কুয়েত থেকে রেডিও তেহরানের কুইজবিজয়ী শ্রোতা শাহজালাল হাজারী এবং কিশোরগঞ্জ নিউজ ডটকমের সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম।
শ্রোতাদের মধ্য থেকে মতবিনিময়ে অংশ নেন কুড়িগ্রামের শাপলা রেডিও লিসেনার্স ক্লাবের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস মাস্টার, নরসিংদীর বানিয়াছল বেতারবন্ধু সংসদের সভাপতি হোসাইন মুসা, রেডিও তেহরানের প্রধান মনিটর ফিরোজ আলম, টাঙ্গাইলের দীঘি বেতার শ্রোতা সংঘের সভাপতি মোবারক হোসেন ফনি, জামালপুরের জাগো রেডিও লিসেনার্স ক্লাবের সভাপতি হারুন অর রশীদ প্রমুখ।
আপেল মাহমুদ রনির কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন নবগঠিত আইআরআইবি ফ্যান ক্লাবের সভাপতি যুবরাজ চৌধুরী। রেডিও তেহরানকে নিয়ে রফিকুল ইসলাম রিমনের কথা ও সুরে উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন নোঙর সাংস্কৃতিক সংসদের পরিচালক রিয়াদুল ইসলাম শাহীন। এছাড়া, গান গেয়ে অনুষ্ঠানকে জমিয়ে রাখেন তারুণ্যে ময়মনসিংহ’র সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ। কবিতা আবৃত্তি করেন রাকিবুল হাসান সুপ্ত।
অনুষ্ঠান শেষে অনলাইন কুইজ ও মাসিক শ্রেষ্ঠ শ্রোতা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে উপহার দেওয়া হয়। ফটো সেশনের মধ্যদিয়ে শেষ হয় শ্রোতাদের এই মিলনমেলা।