সানোয়ার হোসেন। দিনাজপুরের হিলির অলিতে গলিতে লাল-সবুজ পতাকা বিক্রি করছেন। গত ১০ বছর ধরে পতাকা বিক্রির পেশা তার। বাড়ি গোপালগঞ্জের মকসেদপুরে। তবে নিজ জেলায় থেমে থাকেনি তার এ কাজ। দেশের প্রায় সব জেলাতেই পতাকা বিক্রি করে ফিরেছেন তিনি।
বড় আকারের লাল-সবুজ পতাকা ১৫০ টাকা, মাঝারি ১০০ টাকা, ছোট আকারের ২০ থেকে ৩০ টাকা, মাথার ফিতা ১৫ টাকা, রবার ফিতা ২০ টাকা, লাঠি পতাকা ১০ টাকা আর চরকি পতাকা ১২ টাকা দরে বিক্রি করেন তিনি।
পতাকা বেচে দিনে তার উপার্জন হয় দুই থেকে তিন হাজার টাকা। তা থেকে লাভ থাকে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা।
দিন চারেক আগে পতাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছেন সানোয়ার। প্রথমে জয়পুরহাট জেলা থেকে শুরু করেছেন পতাকা বিক্রি। এরপর ডিসেম্বর মাসজুড়ে উত্তর বঙ্গের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় বিক্রি করবেন পতাকা।
হিলি সিপি মোড়ে পানের দোকাদার মিঠু মিয়াকে লাল-সবুজ পতাকা কিনতে দেখা যায় তার কাছ থেকে। তিনি বলেন, ‘বিজয়ের মাস, এই মাসে দেশ স্বাধীন হয়েছে। তাই পতাকা কিনছি। দোকানে পতাকা টানাব।’
হাতে লাঠি আর চরকি পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ৮ বছরের শিশু সবুজ। সে বলে, ‘সামনে ১৬ ডিসেম্বর, বিজয় দিবস। আমি এই পতাকা হাতে নিয়ে মাঠে যাব। সেদিন বিজয়ের মাঠে অনেক খেলাধূলা হবে। যেমন খুশি সাজো হবে। আমি সেদিন মুক্তিসেনা সাজব। পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করব।’
পতাকা ব্যবসায়ী সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর ধরে পতাকা বেচি। সংসারে স্ত্রী-চার ছেলেমেয়ে। প্রতি বছর হিলিসহ উত্তরবঙ্গে বিজয়ের মাসে পতাকা বিক্রি করতে আসি। প্রতিদিন যা বিক্রি হয়, তা থেকে ৮০০ থেকে হাজার টাকা লাভ হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে বাংলার বীর সন্তানরা আমাদের একটা স্বাধীন দেশ উপহার দিয়ে গেছেন। উপহার দিয়েছেন লাল-সবুজ পতাকা। তাদের দেওয়া লাল-সবুজ পতাকা বুকে ধারণ করে রেখেছি। বিজয়ের মাসে মানুষের কাছে এই পতাকার মাধ্যমে বিজয়ের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি।’