বঙ্গবন্ধু ছিলেন এই দেশের স্বাধীনতার স্থপতি, সুতরাং তার কবরে আপনারা আযাব তৈরি করার যে পদ্বতি চালু করেছেন তা কখনই আপনাদের কাছ থেকে কাম্য নয়। আপনারা তার ভাস্কর্য মূর্তি বানিয়ে তার কবর কে জাহান্নামের যে গহ্বর বানানোর চেষ্টা করছেন তা কখনোই শুভননিয় নয় বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মামুুনুল হক।
গতকাল (২০নভেম্বর) শুক্রবার,আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী রহ.এর স্মরণে,জামিয়া ফয়জুর রহমান বড় মসজিদের উদ্যোগে দোয়া মাহফিলে, রাত ১০টায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন,আজ আমরা এর প্রতিবাদ করছি বলে আপনারা বলছেন আমাদের ঘাড় মটকে দিবেন,আপনার কত বড় সাহস হয় এই কথা বলার। অনেকেইতো আমাকে গ্রেফতারের জন্য ৭২ঘন্টার আল্টিমেটামও দিয়েছিলো সরকারকে। সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে,আপনি বুঝার চেষ্টা করেন,আপনার বাবার কবরকে আর জান্নামে পরিণত করবেন না,তিনি জীবিত থাকলে কখনই এমনটা হতে দিতেন না।
এর আগে বক্তব্যের শুরুতে তিনি আল্লামা শফী রহ.এর জীবনী স্মরণ করতে গিয়ে বলেন,২০১৩সালে এই দেশে নাস্তিকরা ভারতের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছিলো,শাহাবাগে তারা আন্দোলনের নামে অশ্লীলতা আর বেহায়াপনার ভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছিলো,আর কিছু কুলাঙ্গারের ইন্ধনে নাস্তিকরা রাসুল সা.এবং আল্লাহকে নিয়ে যেভাবে ইচ্ছা কুটুক্তি করছিলো এতে পুরো দেশ তখন বিপর্যয়ের মুখোমুখি দাড়িয়েছিলো। ঠিক সেই মুহুর্তে দারুল উলুম মইনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার তখনকার নিভৃতচারী সেই মুরুব্বিটি, যিনি পুরোপুরি দুনিয়াবিমুখ ছিলেন,৮৫বছরের সেই বৃদ্ধ লোকটি সেদিন হাদীসের দরস ছেড়ে নাস্তিক মুরতাদদের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে এসেছিলেন,সেদিন যার ডাকে পুরো দেশের তৌহিদী জনতা এক কাতারে এসে দাড়িয়েছিলো,যার ডাকে সমস্ত আলেমগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলো,তিনি আর কেউ নন,তিনিই হলেন আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী রহ.।
আমরা পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই,আজ তাকে নিয়ে,তার অনুসারী দাবি করে দেশের একটি মহলে যে ষড়যন্ত্রের বীজবপন করার চেষ্টা করা হচ্ছে তা কোনদিনও সফল হবে,তৌহিদী জনতা তা কোনদিন সফল হতে দিবে না ইনশাআল্লাহ।
সকাল ১০টা থেকে নগরীর ঐতিহ্যবাহী বড় বাজার চত্বরে শুরু হওয়া দোয়া মাহফিলে,জামিয়া ফয়জুর রহমান রহ.এর পরিচালক আল্লামা আব্দুল হকের সভাপতিত্বে জুমুআর পূর্ব পর্যন্ত স্থানীয় আলেমগণ বক্তব্য রাখেন। এরপর বাদ জুমা হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নবনির্বাচিত আরেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন,আজ এমন একটা সময়ে আমরা পৌঁছেছি,এমন দেশে বসবাস করছি যেখানে হক কথা বললে সরকার আমাদের টুটি চেপে ধরছে,ইলমী কোন সম্মেল আমরা করতে পারছি না,রাসুলের স্মরণে কোন সীরাত প্রোগাম করতে পারছি না। যদি করতে যাই তাহলে সরকার আমাদের বিপক্ষে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
তিনি আরো বলেন,আমরা পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই ভবিষ্যতে যদি আমাদের কোন প্রোগামে সরকার বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে যেখানেই বাধা আসবে সেখানেই প্রতিবাদ আসবে ইনশাআল্লাহ।
বাদ মাগরিব মাওলানা আব্দুল বাসেত খাঁন বলেন,মনে রাখবেন এই পৃথিবীতে আমরা বাঁচতে আসিনি জান্নাত জিততে এসেছি,অতএব বাড়াবাড়ি করবেন না,ফল ভয়ংকর হবে।
পর্দা না করলে কেউ কাফের হয় না,কিন্তু যে পর্দাকে অস্বীকার করে তাহলে সে কাফের।
জিহাদ না করলে কেও কাফের হবে না,কিন্তু কেউ যদি জিহাদকে অস্বীকার করে তাহলে সে কাফের।
সুতরাং হে মুসলমানেরা তোমরা এখনি সাবধান হয়ে যাও,নাহয় আল্লাহর ভয়ংকর শাস্তির জন্য প্রস্তুত থাকো।
আরো বক্তব্য রাখেন,খানকায়ে হুসাইনিয়া মাদানিয়ার মুতাওয়াল্লি মুফতি মাহবুবুল্লাহ্। তিনি বলেন,এই দেশে মূর্তি তৈরি করতে দেওয়া হবে না,যদি মূর্তি তৈরি করতে চাও ভারতে চলে যাও। আজ ইস্কন নামক সংগঠনটি দেশে যে দাঙ্গা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে,তা এদেশের মানুষের জন্য খুবই ভয়ংকর সংবাদ,আমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে এখনি সজাগ হতেে হবে,নাহয় বড় কোন বিপর্যয়ের মধ্যে আমরা পড়ে যাবো।
এছাড়াও নওমুসলিম ওয়াসেক বিল্লাহ্ নোমানী সহ স্থানীয় উলামায়ে কেরামগণও বক্তব্য রাখেন।