খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে ছিল স্পেন। দুই অ্যাওয়ে ম্যাচে এক হার ও ড্র। উয়েফা নেশন্স লিগের ফাইনালসে পা রাখতে দরকার ছিল দারুণ এক জয়। কিন্তু প্রতিপক্ষ জার্মানি বলেই ছিল রাজ্যের শঙ্কা। কিন্তু দলের দুঃসময়ে খেলোয়াড়রা খেলল প্রাণপণ, শানালো দারুণ আক্রমণ। আর তাতে এক প্রকার উড়েই যেন গেল জার্মানি। ইউরোপের পাওয়ার ফুটবলের জনকদের জালে গুণে গুণে ছয় গোল দিয়ে বাজিমাত স্পেনিয়ার্ডদের (৬-০)।
প্রতিপক্ষকে দুমড়ে মুচড়ে দেয়ার বেশি রেকর্ড জার্মানির। ২০১৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে সাত গোল দেয়াসহ অনেক ম্যাচে গোল উৎসবের দারুণ রেকর্ড ছিল দলটির। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলো সেই জার্মানিই। স্পেনের মাটিতে রীতিমতো নাস্তানাবুদই হলো দলটি। প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে জার্মানির এটাই সবচেয়ে বড় ব্যবধানে পরাজয়।
অন্যদিকে গোল উৎসবে নেশন্স লিগের ফাইনালসে পা রাখল লুইস এনরিকের স্পেন। তরুণ ফারান তোরেস করেছেন হ্যাটট্রিক। রদ্রি, মাইকেল ও মোরাতার কল্যাণে এসেছে বাকি তিন গোল। ড্র করলেই হতো জার্মানির, কিন্তু সহজ কাজটি করতে পারেন নাই জোয়াকিম লো শিবির।
১৭ মিনিটে প্রথম গোল স্পেনের। দূরের পোস্টে ফাবিয়ান রুইসের নেওয়া কর্নারে লাফিয়ে কোনাকুনি হেডে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন মোরাতা।
খানিক পর আবারও জালে বল পাঠান মোরাতা, কিন্তু অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। সিদ্ধান্তটি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। প্রবল চাপ ধরে রেখে ৩৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে স্পেন। লাইপজিগের মিডফিল্ডার দানি ওলমোর হেড ক্রসবারে লেগে ফেরার পর ফাঁকায় বল পেয়ে জোরালো শটে জালে পাঠান ম্যানচেস্টার সিটির তরুণ ফরোয়ার্ড তোরেস।
একের পর এক আক্রমণে কোন ঠাসা অবস্থা জার্মানির। ৩৮ মিনিটে রদ্রির গোলে স্কোর ৩-০ করে প্রথমার্ধের বিরতিতে যায় স্পেন। ভাবা হচ্ছিল দ্বিতীয়ার্ধে ঘুড়ে দাড়াবে জার্মানি। কিন্তু হয়নি। ৫৫ মিনিটে তোরেসের দ্বিতীয় গোল, ৪-০।
৭১ মিনিটে দুর্দান্ত গোলে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তোরেস। নাপোলির মিডফিল্ডার রুইসের পাস ডি-বক্সের ঠিক বাইরে পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় জোরালো নিচু শটে কাঁপান জাল। ছয় মিনিট পর জিনাব্রির জোরাল শট ক্রসবারে লাগলে সান্ত্বনাসূচক গোলের দেখাও পায়নি জার্মানি।
শেষের দিকে আরও এক গোল হজম করে জার্মানি। ৮৯ মিনিটে জার্মানির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকেন মাইকেল। ৬-০ গোলের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্পেন। নেশন্স লিগ থেকে বিদায় ঘটে জার্মানির।
জার্মানি গোল পায়নি, এটার চেয়ে বড় বিস্ময়কর যে, দলটি প্রতিপক্ষের গোলপোস্টে লক্ষ্যে একটি শটও নিতে পারেনি। সেখানে গোলপোস্টে ২৩ শটের মধ্যে স্পেনের ১০টি শটই ছিল লক্ষ্যে। আর বল দখলের কথা বলতে গেলে তো আরও চমক। স্পেনের দখল ছিল শতকরা ৭০ ভাগ, জার্মানির মাত্র ৩০ ভাগ।
ছয় ম্যাচে তিন জয় ও দুই ড্রয়ে ১১ পয়েন্ট নিয়ে পরের পর্বে পা রাখলো স্পেন। দুই জয় ও তিন ড্রয়ে জার্মানির পয়েন্ট ৯। এক ম্যাচ করে কম খেলা ইউক্রেন ও সুইজারল্যান্ডের পয়েন্ট যথাক্রম ৬ ও ৩।