একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র একদিন আগে জোরদার করা হয়েছে সেনাবাহীনির টহল। শুক্রবার সারাদেশে গুরুত্বপূর্ণ স্পটে টহল দিয়েছে সেনাবাহীনির সদস্যরা। টহলের পাশাপাশি সেনাবাহিনী তার নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নিয়মিতভাবে যোগাযোগ রাখছে এবং যেকোনো প্রয়োজনে সার্বিক সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে। এতে ভোটারদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে টহল ও যানবাহনে তল্লাশি করেছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ছুটির দিনে ফাঁকা সড়কে যানবাহনের সংখ্যা যদিও কম থাকলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে টহল, তল্লাশি ও চেকপোস্টের দেখা মিলেছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় সেনা সদস্যদের তল্লাশি করতে দেখা গেছে। এ সময় রাস্তায় বিভিন্ন যানবাহনে তারা তল্লাশিও চালায়। এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচন উপলক্ষে সারাদেশে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। এই কয়েক দিন তারা শুধু টহল পরিচালনা করছেন।
এছাড়াও রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, গুলশান বনানী, মহাখালীসহ বাড্ডা, রামপুরা এলাকায় পুলিশ-র্যাবের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও টহল দিতে দেখা গেছে। বিজিবি সদস্যদের টহল ও নজরদারি রাজধানীর উত্তরা র্যাব-১ কার্যালয় থেকে র্যাবের টহল শুরু হয়েছে। গুলশান, আব্দুল্লাহপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তাদের চেকপোস্ট তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে।
টহলরত সেনা সদস্যরা জানান, নির্বাচন কেন্দ্রিক যেকোনও সহিংসতা ঠেকাতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আমাদের টহল ও গোয়ন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে র্যাবের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইবে তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
নির্বাচন সামনে রেখে মাদারীপুরে সেনাবাহিনী ঝটিকা অভিযান ও তল্লাশি চালায়। শুক্রবার বিকেলে সেনাবাহিনী ক্যাপ্টেন আদনান এর নের্তৃত্বে সেনা সদস্যদের মাদারীপুর-১(শিবচর) আসনের পৌরসভা মোড়ের স্বাধীনতা চত্ত্বর সড়ক, প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে, শ্যামলীর মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাতে দেখা যায়। সেনা সদস্যরা এসময় বিভিন্ন যানবাহন তল্লাশি চালায়। এছাড়াও মটরসাইকেলের কাগজপত্র, হেলমেটসহ বিভিন্ন যানবাহনে অভিযান চালাতে দেখা যায়
টাঙ্গাইলে সশস্ত্র বাহীনির টহল জোরদার করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে র্যাবের একটি দল শহরের আবাসিক হোটেলগুলোতে বহিরাগত কেউ আছে কিনা তা যাচাই করে দেখে। এছাড়া শহরের প্রবেশদ্বার গুলোতে চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়ি তল্লাশি চালান তারা। জেলার আটটি আসনের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৩টি টিম দায়িত্ব পালন করছে। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি ১৫ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করছে। ১৫ প্লাটুনের মধ্যে ১২ প্লাটুন বিজিবি ১২ উপজেলায় দায়িত্ব পালন করছে। তিন প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ হিসেবে রয়েছে।
লক্ষীপুরের ৪ টি আসনে শুক্রবার সকাল থেকে জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানসহ বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে পৃথকভাবে সেনাবাহিনীর টহল দিতে দেখা গেছে। নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হওয়ায় জেলা জুড়ে শান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে।
শুক্রবার সকাল থেকেই যশোর-নড়াইল ও যশোর-মাগুরার বিভিন্ন পয়েন্টে তল্লাশি চালাতে দেখা যায় সেনা সদস্যদের। সেনাবাহিনীর ৩-ই বেঙ্গলের সদস্যরা সকাল থেকে যশোর শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেন। এ সময় মনিহার নিউমার্কেট রোডের প্রতিটি গাড়ির লাইসেন্স চেক করেন। পাশাপাশি নিরাপত্তা সংক্রান্ত তল্লাশি কার্যক্রম চালান। এছাড়া নড়াইল ও মাগুরার বিভিন্নস্থানে সেনাবাহিনীর ৩৭-বীর এর সদস্যরা বিভিন্নস্থানে তল্লাশি চালান। সেনাবাহিনী থেকে এটিকে নির্বাচন পূর্ববর্তী নিরাপত্তা সংক্রান্ত সাধারণ তল্লাশি ও চেকপোস্ট বলা হচ্ছে।