শুষ্ক ও অমসৃণ ত্বকের যত্নে যেসব ক্রিম ব্যবহার করা হয়, তাতে একজন মানুষের গায়ে এবং কাপড়ে দ্রুত আগুন ধরে যেতে পারে। এ বছর ব্রিটেনে এ ধরণের দুর্ঘটনায় অন্তত ৫০জন মানুষ মারা গেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ।
তাহলে কি শুষ্ক ও খসখসে ত্বকের যত্নে মানুষ ক্রিম ব্যবহার করবে না?
ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, বিউটি ক্রিম ব্যবহার করবেন, তবে এর কারণে শরীরে ও পরনের কাপড়ে দ্রুত আগুন ধরে যেতে পারে এবং সেই ঝুঁকি মাথায় রেখেই এসব ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
কী ঝুঁকি?
আগে ধারণা করা হত, যেকোনো ময়েশ্চারাইজার বা বিউটি ক্রিম যেটিতে এমোলিয়েন্ট থাকে, তাতে যদি ৫০ শতাংশের বেশি প্যারাফিন থাকে, সেক্ষেত্রে আগুনের কাছাকাছি হলে দ্রুত মানুষের শরীরে এমনকি তার পরনের কাপড়েও আগুন ধরে যাবার আশংকা অনেক বেশি থাকে।
এমোলিয়েন্ট অল্প সময়ের মধ্যে শুষ্ক চামড়াকে নরম করে তা ফেটে যাওয়া ঠেকায়, আর সেজন্য ময়েশ্চারাইজার বা বিউটি ক্রিমে এই উপাদানটি ব্যবহার করা হয়।
মাত্রাতিরিক্ত শুষ্ক ত্বকের নিরাময় ছাড়াও, বিভিন্ন চর্মরোগ সারানোর ওষুধেও এমোলিয়েন্ট ব্যবহার করতে দেখা যায়।
কিন্তু এখন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেসব এমোলিয়েন্ট ক্রিমে প্যারাফিন থাকে না, সেগুলোও একই রকম বিপজ্জনক।
ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্ক করেছে, এ ধরণের ক্রিম যারা ব্যবহার করেন, তারা যেন খোলা আগুনের বেশি কাছে না যান।
এক বছরে ৫০জনের মৃত্যু
ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, প্রায়ই এ ধরণের দুর্ঘটনার কথা শোনা যায়। নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে অগ্নিদগ্ধ হবার পর মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটে।
এজন্য ব্যবহারকারীদের যেমন সতর্ক থাকতে হবে, একই সাথে এমোলিয়েন্ট সমৃদ্ধ ক্রিম উৎপাদনকারীদেরও সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
এখন ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগ এবং হিউম্যান মেডিসিন কমিশন যৌথভাবে এ ঝুঁকি কমাবার চেষ্টা করছে।
এজন্য সংস্থা দুইটি ক্রিম উৎপাদনকারীদের জন্য কিছু নির্দেশনা দিয়েছে,
• পণ্যের মোড়কের গায়ে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করতে হবে যে পণ্য ব্যবহারের কী ঝুঁকি রয়েছে।
• ঝুঁকির সাথে সাথে অল্প কথায় আর একটি ছবির মাধ্যমে ঝুঁকিটি বুঝিয়ে দেবার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
• যেখানে সম্ভব এ সংক্রান্ত তথ্য ও করণীয় সম্পর্কে লিফলেট রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
এখন কী করণীয়?
ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এ সংক্রান্ত কোনো দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণভাবে আগুন ধরে গেলে যেসব প্রতিকার, তাই প্রযোজ্য হবে।
আগুন ধরে গেলে সাধারণ কিছু ব্যবস্থা নেবার পরামর্শ দেয়া হয়েছে:
• আক্রান্ত স্থানে সাধারণ তাপমাত্রার পর্যাপ্ত পানি ঢালতে হবে।
• পোড়া অংশ জীবাণুমুক্ত গজ বা ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে, যাতে জীবাণুর সংক্রমণ না হয়।
• প্রয়োজনে পেইন কিলার ব্যবহার করতে হবে।
• দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।