কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে মাশফি সুমাইয়া নামে এক কলেজছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
রোববার (২৩ আগস্ট) বিকেলে ওই ছাত্রীর বাবা উপজেলার ষাইটকাহন গ্রামের মো. শামীম মিয়া বাদী হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক রাসেল আহমেদকে একমাত্র আসামি করে পাকুন্দিয়া থানায় মামলাটি (মামলা নং-১২ তারিখ-২৩-০৮-২০২০ ইং) দায়ের করেন।
আসামি রাসেল আহমেদ কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার নোয়াবাদ গ্রামের রহমত আলীর ছেলে। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুমাইয়া কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের গণিত বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এর আগে ২০১৭ সালে সুমাইয়া কালিয়াচাপড়া চিনিকল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। সেই স্কুলে পড়ার সময়ে স্কুলের খণ্ডকালীন শিক্ষক রাসেল আহমেদের কাছে প্রাইভেট পড়ার সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দু’জন পৃথক স্থানে থাকলেও তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। গত তিন বছর ধরে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সুমাইয়াকে ধর্ষণ করে আসছিলেন রাসেল। কিন্তু তাকে বিয়ে না করে শুক্রবার (২১ আগস্ট) গোপনে অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করেন তিনি। এমন খবর সইতে না পেরে পরের দিন শনিবার (২২ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে নিজের ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন সুমাইয়া। আত্মহত্যার আগে ওই শিক্ষকের ছবিসহ ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি।
ওই স্ট্যাটাসে সুমাইয়া লিখেছেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিন বছর ধরে ছাত্রীকে ধর্ষণের পরে অন্য মেয়েকে বিয়ে করে ছাত্রীকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা আমার প্রিয় শিক্ষক। আর সেই ভাগ্যবান ছাত্রী আমি নিজে। আল্লাহ আমায় মাফ করো। দেশে এমন শিক্ষক আর কোনো ছাত্রীর জীবনে না আসুক। সবাই আমায় মাফ করবেন, সদ্য এসএসসি পাস করা একটা মেয়ে বিয়ের মানে এসব জানতামই না। ভদ্র স্যারকে বিশ্বাস করতাম, যা বলতো তাই শুনতাম। যাই হোক, ভাল থাক সে….বিদায়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে পাকুন্দিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) মো. শ্যামল মিয়া জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক রাসেল আহমেদকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।