হিজাব পরায় বসতেই দেয়া হলো না পরীক্ষায়!

ভারতের গোয়ার পর এ বার দিল্লি। হিজাব পরে যাওয়ায় ফের এক ছাত্রীকে বসতেই দেয়া হলো না পরীক্ষায়। ছাত্রীর নাম উমাইয়া খান। তিনি জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ পড়ছেন।

গত সপ্তাহে নেট পরীক্ষা ছিল তার। পরীক্ষার সিট পড়েছিল দিল্লির রোহিণী এলাকায়। নির্ধারিত সময়েই পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছেছিলেন উমাইয়া। অভিযোগ, যে ঘরে সিট পড়েছিল সেই ঘরে ঢুকতে যেতেই পরীক্ষকদের বাধার মুখে পড়তে হয় তাকে।

ওই ছাত্রীর দাবি, পরীক্ষার হলে দায়িত্বে থাকা পুরুষ ও মহিলা পর্যবেক্ষকরা তাকে পরীক্ষায় বসতে বাধা দেন। কেন তাকে পরীক্ষা দেয়ার অনুমতি দেয়া হচ্ছে না, এই প্রশ্ন করতেই পর্যবেক্ষকরা সাফ জানিয়ে দেন, হিজাব পরে পরীক্ষায় বসতে দেয়া যাবে না। পরীক্ষায় বসতে হলে হিজাব খুলে ফেলতে হবে!

ছাত্রীটি বলেন, “পরীক্ষকদের বার বার বলি এটা আমার ধর্মীয় ব্যাপার। হিজাব খুলতে পারব না।তাদের অনুরোধও করি পরীক্ষায় বসতে দেয়ার জন্য, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। শুধু তাই নয়, শীর্ষ কর্মকর্তাদের জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি।”

পরীক্ষায় বসতে না পেরে বাড়ি ফিরে আসেন উমাইয়া। জানান, ইউজিসি-কে এ বিষয়ে সবিস্তারে জানিয়ে একটি মেইল করেছেন।যদি ইউজিসি কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো উত্তর না দেয় তা হলে আইনের সাহায্যও নেবেন বলে জানিয়েছেন উমাইয়া।

হিজাব পরার জন্য বোনকে পরীক্ষায় বসতে না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উমাইয়ার ভাই মোহাম্মদ জাহিদ আফজাল। তিনি বলেন, “এটা শুধু উমাইয়ার ক্ষেত্রে ঘটেছে এমনটা নয়, আরো অনেক মুসলিম মেয়ের সঙ্গেও এমন ঘটনা ঘটেছে। উচ্চশিক্ষার দিক থেকে মুসলিমরা যেখানে পিছিয়ে, এমন সুযোগ পাওয়ার পরও তাদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক।”

জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আমিরুল হাসান আনসারি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, “এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। শিক্ষা ও পরীক্ষায় বসা ছাত্রছাত্রীদের অধিকার। কোনো বিশেষ ধর্মের বলে ছাত্রছাত্রীদের সেই অধিকার কেড়ে নেয়া যায় না।”

গত ১৮ ডিসেম্বর ঠিক একই রকম ঘটনা ঘটে গোয়ার পানাজিমে। হিজাব পরে যাওয়ায় সাফিনা খান নামে এক ছাত্রীকে নেট পরীক্ষায় বসতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। সাফিনার অভিযোগ ছিল, পরীক্ষার হলে ঢোকার পরই তাকে হিজাব সরাতে বলেন পর্যবেক্ষক। কিন্তু তিনি হিজাব খুলবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। আর তার পরই তাকে পরীক্ষায় বসতে দিতে অস্বীকার করেন পর্যবেক্ষকরা।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top