ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ প্রতিষ্ঠাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন: সুজন

বঙ্গবন্ধু সারাজীবন রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সংগ্রাম করে গেছেন উল্লেখ করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই ছিল তার স্বপ্ন ।

‘তাই জ্ঞান বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে আমাদের বঙ্গবন্ধুর আজীবন লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে।

তাহলে আমরা চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথাযর্থ সম্মান প্রদর্শন করতে পারবো। ’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে চসিক আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শনিবার (১৫ আগস্ট) সকালে টাইগারপাসের চসিক নগর ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রশাসক সুজন।

এ সময় চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ৃয়া, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমেদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুফিদুল আলম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.সেলিম আকতার চৌধুরী, স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা জজ) জাহানারা ফেরদৌস, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা আকতার নেলী, প্রশাসকের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, রাজস্ব কর্মকর্তা শাহেদা পারভীন, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি একেএম রেজাউল করিম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান সিদ্দীকি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এরপর চসিক কনফারেন্স হলে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রশাসক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা।

চসিক প্রশাসক বলেন, ৪৫ বছর আগে ১৯৭৫ সালের এই দিনে পাক হায়েনাদের প্রেতাত্মা তথা একদল বিপথগামী সেনাবাহিনীর একটি চক্রান্তকারী চক্র সপরিবারে হত্যা করে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতীর অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

বঙ্গবন্ধু ৪৮, ৫২,৬৬, ৬৯, ৭০সহ বিভিন্ন সময়ে মৃত্যুর দুয়ার থেকে বার বার ফিরে এসেছিলেন, ৭১-এ পাকিস্তানি হায়েনারা যা করতে পারে নি, সেই ন্যক্কারজনক কাজটিই অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় ও পূর্বপরিকল্পিতভাবে সম্পাদন করে পাপিষ্ঠ ঘাতকরা। ওরা মানুষ নামের হায়েনার দল, ওরা শয়তানের প্রেতাত্মা। ওরা জঘন্য। ওরা বিপদগামী হিংস্র জানোয়ারের দল। ’

সুজন বলেন, তবে একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে তিনি মৃত্যুহীন। চির অমর হয়ে থাকবেন বাঙালি জাতির প্রত্যেকের মনে। সেদিন ঘাতকদের উদ্দেশ্য ছিল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করা। কিন্তু সেদিন জাতির পিতাকে হত্যা করলেও তাঁর আর্দশ, নীতিকে মুছে ফেলতে পারেনি ঘাতকরা।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্য শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় খতমে কোরআন, মিলাদ ও বিশেষ দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। পরে প্রশাসক মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সারা দেশে ১ কোটি চারাগাছ রোপণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে টাইগারপাসের বিন্নাঘাস প্রকল্প এলাকায় কয়েকটি ফলদ ও ওষুধি গাছের চারা লাগান।

শোক দিবসে চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সব ধরনের রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে। চিকিৎসাসেবার মধ্যে নাক-কান-গলা, দন্ত চিকিৎসা, রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, ডায়াবেটিক পরীক্ষা, মেডিকেল চেক-আপ ইত্যাদি ছিল উল্লেখযোগ্য।

চসিক জেনারেল হাসপাতাল, মেমন মাতৃসদন হাসপাতাল, নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র, দাতব্য চিকিৎসালয় থেকে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়।

প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন উপস্থিত থেকে এই সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এ সময় চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী, প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী সহ সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া চসিক স্বাস্থ্য বিভাগের অধীন মিডওয়াফারি ইনস্টিটিউট, হেলথ টেকনোলজি, চসিক জেনারেল হাসপাতাল, দাতব্য চিকিৎসালয়, নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে পৃথক পৃথক দোয়া মাহফিল ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।

পরে প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন স্টেশন রোডে পরিচ্ছন্ন সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করে বলেন, মুজিববর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি তবে করোনার থাবায় সামাজিক দূরত্ব রক্ষার স্বার্থে এসব আয়োজন সীমিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পরিচ্ছন্ন সেবা যাতে পুরোদমে নগরবাসী পায় সেজন্য সবাইকে নব উদ্যমে কাজ করতে হবে।

Share this post

scroll to top