‘শেষ ভালো যার সব ভালো তার’ এই প্রবাদটি হয়তো বাংলাদেশে দলের ক্ষেত্রে ব্যাবহার করা ঠিক হবে না। তবে শেষ টি-টোয়েন্টির শুরু আর শেষের হিসাব মেলাতে গেলে প্রবাদটি মিলে যায়। কারণ যেভাবে শুরু করেছিল ঠিক বিপরীত ভাবে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ হেরে গেলো বাংলাদেশ। অবশ্য বাংলাদেশ ইনিংসের দশ ওভার পুরো হতেই ম্যাচের চিত্র পরিস্কার-এই ম্যাচে হারছে বাংলাদেশ। এবং সেটা বেশ বড় ব্যবধানেই। ৫০ রানে ম্যাচে হার তারই প্রমান। বড় এই জয়ের সঙ্গেই টি-টুয়েন্টি সিরিজও জিতে নিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবীয়দের ১৯০ রানের জবাবে বাংলাদেশ থেমে গেল ১৪০ রানে। হারের ব্যবধানই জানাচ্ছে মোটেও জমেনি সিরিজ নির্ধারণী এই ম্যাচ।
জয়ের উৎসবে বছরের শেষ ম্যাচটা রাঙাতে চেয়েছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু বছরের শেষ আর্ন্তজাতিক এই ম্যাচে যে লাগলো কলঙ্কের দাগ। আম্পায়ার তানভীর আহমেদের বাজে সিদ্ধান্তে এই ম্যাচের আনন্দ হারিয়ে গেলো!
এই ম্যাচে ব্যাট-বলের ছন্দের কথা কেউ আর মনে রাখলেন না। ম্যাচটা আম্পায়ার তানভীর আহমেদের মহাভুলের ম্যাচ হিসেবেই ক্রিকেটের স্মৃতিতে কলঙ্কিত হয়ে থাকবে! আম্পায়ারের বাজে ভুল একটা ম্যাচকে কিভাবে নষ্ট করে দিতে পারে তারই জলজ্যান্ত উদাহরণ হয়ে থাকলো টি-টুয়েন্টি সিরিজের শিরোপা নির্ধারণী এই ম্যাচ।
বাংলাদেশ ইনিংসের ম্যাচের চতুর্থ ওভারের শেষ বলে উইন্ডিজ পেসার ওসানে থমাসের বলে লিটন ক্যাচ তুলে আউট হন। কিন্তু আম্পায়ার তানভীর নো কল করেন। ফ্রিহিটের ঘোষণা দেন। খানিকবাদে টিভি রিপ্লেতে পরিস্কার দেখা যায়-ওসানে থমাসের পা পপিংক্রিজের ভেতরেই ছিলো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। খেলা বন্ধ হয়ে যায়। চতুর্থ আম্পায়ারের কাছে সাইডলাইনে গিয়ে উইন্ডিজ অধিনায়ক কার্লোস ব্রাথওয়েট অভিযোগ করেন। ম্যাচ রেফারি জেফ ক্রোও তার চেয়ার ছেড়ে মাঠে আসেন। যেহেতু ফিল্ড আম্পায়ার নো কল করেছেন তাই সেটা ফিরিয়ে নেয়ার আর কোন উপায় নেই (যদিও রিপ্লে জানাচ্ছে সেটা নো বল ছিলো না! )। নিয়মের সেই খাঁড়ায় পড়ে লিটনের উইকেট থেকে বঞ্চিত হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই ঘটনার ঠিক দুই বল আগেও তানভীর নো কল করেছিলেন। টিভি রিপ্লেতে দেখা গেলো সেটাও নো বল ছিলো না! একই ওভারে দুই দুটি মহাভুল সিদ্ধান্ত দিয়ে বসেন আম্পায়ার তানভীর। দু’বারই বঞ্চিত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে ক্ষতিটা কম হলো না বাংলাদেশেরও!
আম্পায়ার তানভীরের এই নো বলের কান্ডের পর বাংলাদেশ দল ব্যাটিং থেকে পুরোপুরি মনোযোগ হারিয়ে বসে। খানিকবাদে সৌম্য সরকার ফিরে গেলেন। সাকিবও এলেন এবং গেলেন। মুশফিক, আরিফুল, মাহমুদউল্লাহ কেউ টিকলেন না। উইন্ডিজ পেসার কিমো পল একাই ধসিয়ে দিলেন বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ। ১৫ রানে ৫ উইকেট শিকার করা কিমো পল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জেতানো এই ম্যাচে নায়ক। টি-টুয়েন্টিতে এটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সেরা বোলিং।
ব্যাটিংয়ে এভিন লুইস এবং বোলিংকে কিমো পল এই ম্যাচেরা সেরা পারফর্মার। তবে এদের পারফরমেন্স এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টুয়েন্টির ট্রফি জয় সবকিছুকে ছাপিয়ে এই ম্যাচের খলনায়ক হয়ে রইলেন একজন-আম্পায়ার তানভীর আহমেদ!
স্কোরকার্ড
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৯০/১০ (১৯.২ ওভারে, লুইস ৮৯, হোপ ২৩, পল ২, পাওয়েল ১৯, হেটমায়ার ০, পুরান ২৯, ব্রাথওয়েট ৮, রদারফোর্ড ২, অ্যালেন ৮, কটরোল ২, থমাস ০, সাকিব ৩/৩৬, মুস্তাফিজুর ৩/৩৩, মাহমুদউল্লাহ ১৮/৩)।
বাংলাদেশ: ১৪০/১০ (১৭ ওভারে, তামিম ৮, লিটন ৪৩, সৌম্য ৯, সাকিব ০, মুশফিক ১, মাহমুদউল্লাহ ১১, মেহেদি ১৯, আরিফুল ০, আবু হায়দার ২২*, মুস্তাফিজুর ৮, অতিরিক্ত ১৪, কিমো পল ৫/১৫, অ্যালেন ২/১৯)। ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫০ রানে জয়ী।