গাজীপুরে প্রেমে বাধা দেওয়ায় প্রেমিকার দুলাভাইকে হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ঘাতক প্রেমিক আসিফ হায়দারক (২৫) ঢাকার মিরপুর থেকে আটক করেছে র্যাব। আটক আসিফ হায়দার ওরফে আলমগীর ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ নারায়নপুর ইচাখিলা এলাকার জাকারিয়ার ছেলে। তিনি ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানার মানিকদি কাজীবাড়ী এলাকায় বসবাস করতেন। শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১ এর পোড়াবাড়ী ক্যাম্প এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
নিহত দুলাভাই রুবেল মিয়ার (২৫) বাড়ি লালমনিরহাট সদরের কাশিনাথ ঝাড় এলাকায়। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পূর্ব চান্দনা এলাকায় বসবাস করতেন।
র্যাব জানায়, গত ২ আগস্ট পূর্ব চান্দনা এলাকায় শ্যালিকার প্রেমে বাধা দেওয়ায় রুবেল মিয়াকে আলমগীর ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করেন। পরে রুবেল মিয়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ আগস্ট মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোসা. শাফি বাদী হয়ে জিএমপির বাসন থানায় আসিফ হায়দার ওরফে আলমগীরকে আসামি করে মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (৭ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার মিরপুর কালশী মোড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসিফ হায়দার ওরফে আলমগীরকে আটক করা হয়।
র্যাব আরও জানায়, আলমগীরের দেওয়া ভাষ্যমতে তিনি পেশায় একজন পিকআপ চালক। গত আট মাস আগে রুবেল মিয়ার শ্যালিকার সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। এ পরিচয়ের সূত্র ধরে এক পর্যায়ে তাদের দুজনের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রুবেল তার শ্যালিকার প্রেমিক আলমগীর সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, আলমগীর একজন মাদক সেবনকারী ও খুব উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির। এ কারণে রুবেল ঘাতক আলমগীরের সঙ্গে তার শ্যালিকার সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি। গত ১৫ দিন আগে আলমগীরকে তার শ্যালিকার সঙ্গে কোন ধরনের যোগাযোগ রাখতে নিষেধ করেন। এতে আলমগীর ভিকটিম রুবেলের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং তাকে হত্যা করে তার প্রেমিকাকে তুলে নেওয়া হুমকি দেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২ আগষ্ট আলমগীর উত্তরার জসিম উদ্দিন এলাকা হতে একটি ধাড়ালো ছুরি কিনে রাত সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুরে পৌঁছেন। রুবেল মিয়া বাসায় ফেরার পথে ওঁত পেতে থাকেন। এদিকে রুবেল মিয়া প্রতিদিনের মতো তার ভাড়ায় চালিত অটোরিক্সা গ্যারেজে জমা দিয়ে বাসায় ফেরার জন্য রওনা হন। ভিকটিম বাসায় ফেরার পথে রাত সোয়া ১০টার দিকে আলমগীর তার পথরোধ করেন। তাদের দুজনের মাঝে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আসামি ধারালো ছুরি দিয়ে রুবেলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যান। এসময় রুবেলের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ও স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪ আগস্ট সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রুবেল মারা যান।