পারিবারিক বিরোধের জেরে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় প্রবাসী পাষন্ড স্বামী আবু বাক্কারের হাতে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার বীরইখালপাড় গ্রামের সোহরাব উদ্দিনের মেয়ে মাহফুজা খাতুন (৩৫) নামের এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার জাংগালিয়া ইউনিয়নের দগদগা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরই ঘাতক স্বামী আবু বাক্কার সিদ্দিক পলাতক।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার সকালে নিহতের পিতা সোহরাব উদ্দিন বাদী হয়ে আবু বাক্কার সিদ্দিককে অভিযুক্ত করে পাকুন্দিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জাংগালিয়া ইউনিয়নের মৃত মুর্শিদ উদ্দিনের ছেলে আবু বাক্কার সিদ্দিকের সঙ্গে প্রায় ১২ বছর আগে পারিবারিকভাবে মাহফুজা খাতুনের বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে জিহাদ (১০) ও জাহিদ (৫) নামের দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে। পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে আবু বক্কর সিদ্দিক শ্বশুরবাড়ির সহযোগিতায় আনুমানিক ছয় বছর আগে চাকরি নিয়ে সৌদি আরব যান। বিদেশ যাওয়ার পর থেকে স্ত্রীকে ভরণপোষণের খরচ না দেওয়ায় মাহফুজা দুই সন্তান নিয়ে তাঁর পিতার বাড়িতে চলে যান।
এ নিয়ে প্রায়ই স্বামীর সঙ্গে মুঠোফোনে মাহফুজার ঝগড়া হতো। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। গত ১৭ জুলাই আবু বক্কর সিদ্দিক সৌদি আরব থেকে ছুটি নিয়ে নিজ বাড়িতে আসেন। পরে দুই পরিবারের লোকজন বসে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সৃষ্ট মতবিরোধ মীমাংসা করে দেন। পরে মা নাজমা খাতুনকে সঙ্গে নিয়ে মাহফুজা স্বামীর বাড়িতে যান। কিন্তু আবু বক্করের মনের মধ্যে ছিল অন্য রকম পরিকল্পনা। পূর্ববিরোধের জের ধরে মঙ্গলবার (২১ জুলাই) রাত সাড়ে ১২টার দিকে আবু বক্কর সিদ্দিক চাপাতি দিয়ে ঘুমন্ত স্ত্রীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যান। এ সময় মাহফুজার চিৎকার শুনে মা নাজমা আক্তারসহ বাড়ির অন্য লোকজন এগিয়ে এলে উপস্থিত সবার সামনে স্বামী তাঁকে কুপিয়েছে বলে জানান। এর পরই তিনি মারা যান।
খবর পেয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে পাকুন্দিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠায়।
পাকুন্দিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আসামিকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।