সবচেয়ে বড় বাজেট ঘোষণা করলেন সৌদি বাদশাহ

সামাজিক খাতে ব্যয় বাড়িয়ে মঙ্গলবার ২০১৯ সালের বাজেট ঘোষণা করেছেন সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ। ২৯ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের এই বাজেটই দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট। তবে এই বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে সাড়ে তিন হাজার কোটি মার্কিন ডলার। তেলের দাম কমতে থাকার কারণে এ নিয়ে ষষ্ঠ বছরের মতো বাজেটে ঘাটতি রাখল দেশটি। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘোষিত ভিশন ২০৩০ অনুযায়ী নাগরিকদের জন্য আরো কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চায় রিয়াদ। তবে বাজেট ঘাটতি কমাতে সরকারের কর বৃদ্ধিসহ অন্যান্য পদক্ষেপের কারণে ভুগছে দেশটির নানা বাণিজ্যিক খাত।

এমন অবস্থায় মঙ্গলবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে বাদশাহ সালমান বলেন, ‘আমরা অর্থনেতিক সংস্কার, আর্থিক শৃঙ্খলা অর্জন, স্বচ্ছতা উন্নয়ন এবং বেসরকারি খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধিকে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’। গত সেপ্টেম্বরে এক প্রাক-বাজেট বিবৃতিতে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, বেকারত্ব কমানো ও মন্থর অর্থনৈতিক উন্নয়নে গতি আনতে ২০১৯ সালে ৭ শতাংশ বাজেট ব্যয় বাড়ানো হবে। গত বছরের গ্রীষ্ম থেকে দেশটিতে বেকারত্বের হার ১২ শতাংশে স্থবির হয়ে আছে। এক দশকের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ।

কোটা ও বিদেশী কর্মী আনার ওপরে ফি ধার্য করায় গত ১২ মাসে দেশটি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে হাজার হাজার বিদেশী শ্রমিক। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অভ্যন্তরীণ চাহিদা আর এ কারণে ২০০৯ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কটের পর থেকে প্রথমবারের মতো গত বছর সঙ্কুচিত হয়েছে সৌদি অর্থনীতি। সৌদির রাষ্ট্রায়ত্ব বার্তা সংস্থায় প্রকাশিত এক রাজকীয় আদেশে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিজীবী এবং সেনাসদস্যরা মাসিক এক হাজার রিয়াল (সৌদি মুদ্রা) ভাতা পেতে থাকবেন। অবসরপ্রাপ্ত, সামাজিক নিরাপত্তার সুবিধাভোগী এবং শিক্ষার্থীদের পাওয়া ভাতার পরিমাণ বাড়বে দশ শতাংশ।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি এবং চলতি বছরের শুরুতে চালু হওয়া পাঁচ শতাংশ ভ্যাট বৃদ্ধির কারণে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছে দেশটির বাণিজ্যিক খাতগুলো। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বছর এখন পর্যন্ত ভ্যাট থেকে ১২০০ কোটি মার্কিন ডলার আয় করেছে। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান জানিয়েছেন তেল বহির্ভূত খাত থেকে আয়ের পরিমাণ ২০১৪ সালের ৩৪০০ কোটি মার্কিন ডলার থেকে এ বছরে ৭৭০০ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। ধারণা করা হচ্ছে এই আয়ের পরিমাণ ৮৩৫০ কোটি মার্কিন ডলারে দাঁড়াবে। যা মোট রাজস্ব আয়ের এক-তৃতীয়াংশ।

বাজেট ঘাটতি পূরণে রিজার্ভ থেকে শত শত কোটি ডলার উত্তোলন ছাড়াও অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি ডলার ঋণ করেছে। অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জাদান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সরকারি ঋণের পরিমাণ বর্তমানে জিডিপির ১৯ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২১ দশমিক ৭ শতাংশে পৌঁছতে পারে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top