শেরপুরে এবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ১ আদালতের বিচারক কামাল হোসেন (৪৬)। বর্তমানে তিনি হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। শেরপুরের বিচার বিভাগের মধ্যে তিনিই প্রথম করোনায় আক্রান্ত হলেন। ময়মনসিংহ পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় রবিবার রাতে তার করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। ২৯ জুন সোমবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র বেঞ্চ সহকারী শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদেরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা জজশিপের ভারপ্রাপ্ত নাজির আমিনুল ইসলাম বাদল জানান, করোনা ভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল আদালতের প্রথমভাগে জেলা জজশিপের মধ্যে কেবল জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজতি আসামিদের জামিন শুনানিসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শুনানী চলছিল। বর্তমানে সীমিত পরিসরে জজশিপের সব আদালতে এ কার্যক্রম চলায় অন্যান্যদের মতো যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ১ কামাল হোসেনও বিচারকাজে অংশ নিচ্ছিলেন। এমন অবস্থায় ২৬ জুন তার গলা ব্যথা শুরু হলে তিনি পরদিন সরাসরি ময়মনসিংহে গিয়ে এসকে হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। এরপর ২৮ জুন রাতে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবের পরীক্ষায় তার নমুনা পজিটিভ আসে। রাতেই পিসিআর ল্যাবের ফলাফল জানান এসকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই তিনি ময়মনসিংহ নগরীর বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন। এ অবস্থায় তার বাসায় অবস্থান করা কলেজশিক্ষিকা স্ত্রী, ২ সন্তান, গৃহকর্মী ও তার ২ আত্মীয়ের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেওয়া হয়।
করোনায় আক্রান্ত বিচারক কামাল হোসেন জানান, সামান্য গলা ব্যথা ছাড়া শরীরে এখনও কোনো করোনার বাহ্যিক উপসর্গ নেই। অনেকটা স্বাভাবিক অবস্থায় তার চিকিৎসা চলছে। তিনি আরো জানান, তার পিতা ফজলুল হক (৮০) করোনা আক্রান্ত হয়ে ২৩ জুন থেকে মুক্তাগাছা পৌর শহরের মোজাটি মহল্লার নিজ বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন। দ্বিতীয়বার নমুনা সংগ্রহ করা হলেও এখনও সেই রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া সাইফুল ইসলাম (৫০) নামে তার এক বড় ভাইও করোনায় আক্রান্ত। তিনি হতাশ না হয়ে দৃঢ় মনোবল পোষণ করে বলেন, পরিবারের একাধিক সদস্যসহ করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আল মামুন তার সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।
সিভিল সার্জন ডা. এ কে এম আনওয়ারুর রউফ বলেন, সরাসরি ময়মনসিংহে তার নমুনা পরীক্ষা হওয়ায় বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। তারপরও এখন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তরফ থেকে তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেওয়া হবে। তিনি বা তার পরিবারের তরফ থেকে ইচ্ছা পোষণ করলে দেওয়া হবে চিকিৎসাসেবা।