ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর গুলিতে নিহত বাংলাদেশীর লাশ ফেরত দেয়নি বিএসএফ। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় হালুয়াঘাট উপজেলার গোবরাকুড়া স্থল বন্দর সংলগ্ন নো ম্যান্স ল্যান্ডে দু’দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে লাশ ফেরত বা শনাক্ত করতে দেয়নি। বুধবার সকালে আবার পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) গোবরাকুড়া বিওপির কমান্ডার নায়েক সুবেদার হারুনুর রশিদ বিএসএফ’র গুলিতে বাংলাদেশি নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার বিকেলে বিএসএফ’র সাথে বিজিবির পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু ময়না তদন্ত না হওয়ায় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী লাশ ফেরত বা শনাক্ত করতে দেয়নি। কাল (বুধবার) সকালে অনুষ্ঠিতব্য পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে শনাক্তের পর লাশ ফেরত দেয়া হবে বলে বিএসএফ তাদেরকে জানিয়েছেন।
বিজিবির ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল তৌফিক বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, পতাকা বৈঠকে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে অনাকাঙ্খিত এ হত্যাকান্ডের ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। বৈঠকে হালুয়াঘাট থানার ওসি (তদন্ত) আবু বকর সিদ্দিকও উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্তের গোবরাকুড়া স্থলবন্দরের অদুরে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আব্দুল জলিল (২৬) নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করে তাঁর পরিবার। আব্দুল জলিল সীমান্তবর্তী কাঁটাতারের বেড়ার ভারতের একশ’ গজ অভ্যন্তরে ভোড়াঘাট নদীর ঢালায় গুলিতে নিহত হন। হালুয়াঘাট থানার ওসি (তদন্ত) আবু বকর সিদ্দিক খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পতাকা বৈঠকে বিএসএফ জলিলের লাশ ফেরত দেয়নি।
নিহত আব্দুল জলিলের বড় ভাই শুকুর আলী ও খলিল মিয়া জানান, হালুয়াঘাট উপজেলার পশ্চিম গোবরাকুড়া গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে তাদের ছোট ভাই আব্দুল জলিল দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। তাকে কয়েক বছর আগে বিএসএফ ধরে নিয়ে নির্যাতন করার পর মানসিকভাবে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। গত সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। সকালে খবর পেয়ে গুলিবিদ্ধ লাশের বর্ণনা অনুযায়ী নিহত ওই ব্যক্তি তাদের ছোট ভাই বলে দাবি করেন তারা।
এদিকে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স এক বিবৃতিতে হালুয়াঘাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, চীন, নেপাল, পাকিস্তান সীমান্তে ভারত এমন কিছু করতে পারে না। সেখানে তারা লেজ গুটিয়ে দৌড় দেয়। আর বাংলাদেশ সীমান্তে অসহায় মানুষকে গুলি করে হত্যা করে। তিনি জলিলের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। একই সাথে প্রশাসনের প্রতি অসহায় এই পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা ও পুনর্বাসনের আহবান জানান। #