জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বেগম খালেদা জিয়া’ হলের নাম পরিবর্তনের চেষ্টা চালিয়েছে জাবি ছাত্রলীগের একনেতা। রবিবার রাত দুইটার দিকে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হামজা রহমান অন্তর এ কাজ করেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অন্তর ও তার দুই-তিনজন অনুসারী ওই হলের সামনে গিয়ে খালেদা জিয়ার নামফলক ও প্রতিকৃতে ক্রস চিহ্ন দেয় এবং একটি কাপড়ের ব্যানারে ‘রোকেয়া হল’ লিখে খালেদা জিয়ার নাম ঢেকে দেয়। এসময় হল প্রশাসন, ছাত্রলীগের নেত্রীবৃন্দ, সাংবাদিক কেউই উপস্থিত ছিলেন না। হল গেইটে অবস্থানরত প্রহরীকে জাগিয়ে এ কাজ করে অন্তর।
পরবর্তীতে ভোরে হল প্রশাসন বিষয়টি জানতে পেরে সাথে সাথে মানুষের দৃষ্টিগোচর হওয়ার আগেই খালেদা জিয়ার নামফলক ও প্রতিকৃতে ক্রস চিহ্ন এবং ‘রোকেয়া হল নামের ব্যানারটি সরিয়ে নেয় বলে জানান হল ওয়ার্ডেন ড. মো আওলাদ হোসেন।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সফিয়ান, ‘অন্তর আমাদেরকে জানিয়ে এ কাজ করেনি। আমাদের কোন নির্দেশনাও ছিলো না। এর সাথে আমরাদের কোন সম্পর্ক নাই।
আপনি কেন একাই নাম পরিবর্তন করতে গেলেন এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হামজা রহমান অন্তর লিখিত বক্তব্যে পাঠিয়ে বলেন,‘বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার বলার মতো কোনো অবদান নেই বরং দেশের মানুষের টাকা মেরে খাওয়ার দায়ে সে কারাগারে রয়েছে। তার নামে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে আবাসিক হল থাকা লজ্জাজনক। এই লজ্জার দায় থেকে এই কাজ করেছি। অন্যদিকে নারী শিক্ষার জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্মদিন ও মৃত্যুদিন ছিলো গতকাল। তাই তারিখটিতে তার নামেই হলের নতুন নাম দেওয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ন নৈতিক প্রতিবাদ।
এদিকে খালেদা জিয়া হলের নাম পরিবর্তন করার চেষ্টায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাবির জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। এছাড়াও গতকাল রাতে অধ্যাপক মো. কামরুল আহসানের নেতৃত্বে রাতে ওই হলের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন এবং ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের কাছে এর সুষ্ঠু বিচারের জন্য আবেদন করেন।
এদিকে হলের নাম পরিবর্তন করার চেষ্টায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাবি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। কারারুদ্ধ সভাপতি সোহেল রানা ও সম্পাদক আব্দুর রহমান সৈকতের পক্ষে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শামীম হোসেন এ প্রতিবাদ জানান। এ কর্মকান্ডে ছাত্রলীগের অনেক সাবেক ও বর্তমান অনেক নেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ঘৃণার রাজনীতি পরিহার করতে বলেন।