আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, বাংলাদেশ যেভাবে কভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলার চেষ্টা করছে তাতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মানবাধিকার রক্ষা হচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতির ওপর সংগঠনটি গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের ওয়েবসাইটে ১৮ পাতার একটি বিশ্নেষণ প্রকাশ করেছে।
এতে অ্যামনেস্টি দেখিয়েছে, কীভাবে বাংলাদেশের দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এই সংকটে মুখ থুবড়ে পড়েছে। করোনাভাইরাসের উপসর্গ রয়েছে যেসব রোগীর, তাদের হাসপাতালের দরজা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য যথেষ্ট সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না এবং তাদের নানা ধরনের নিগ্রহের শিকার হতে হচ্ছে।
গতকাল প্রকাশিত বিশ্নেষণে অ্যামনেস্টি আরও বলেছে, মানবাধিকার অবশ্যই সব প্রতিরোধ, প্রস্তুতি, নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসা প্রচেষ্টার কেন্দ্রে থাকতে হবে। যেহেতু প্রাণঘাতী আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু আরও বেড়েছে। বাংলাদেশ করোনা মহামারি মোকাবিলায় নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। আন্তর্জাতিক এই মানবাধিকার সংগঠনটি দুর্বল স্বাস্থ্য অবকাঠামোকে বাংলাদেশের জন্য বড় একটি সংকট হিসেবে উপস্থাপন করেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সাহায্য প্রয়োজন। বাংলাদেশ সরকার এ ক্ষেত্রে মানবাধিকার আইন এবং মানের সঙ্গে সামাঞ্জস্য রেখে তার স্বাস্থ্য চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারে।
সংগঠনটি মনে করে, সরকারকে মানুষের স্বাস্থ্যের অধিকার, স্বাস্থ্যকর্মীদের অধিকার, সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার, অনানুষ্ঠানিক খাতের কর্মীর অধিকার এবং তথ্য ও বাক-স্বাধীনতার অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানো, এগুলো রক্ষা ও পূরণ অবশ্যই করতে হবে।
অ্যামনেস্টি বলেছে, বাংলাদেশকে কর্তৃপক্ষকে শুধু দেশের নাগরিকদেরই নয়, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গার স্বাস্থ্যের অধিকারও রক্ষা করতে হবে। কারণ রোহিঙ্গারাই এই মহামারিতে আক্রান্ত হওয়ার সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে আছে। তাই এই চলমান পরিস্থিতে সব ক্ষেত্রে মানবাধিকার রক্ষা করতে হবে।
এদিকে এক দিনে আরও এক হাজার ৪১ জনের মধ্যে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮ হাজার ৮৬৩ জন। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ১৪ জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮৩ জন হলো। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন। গত এক দিনে মোট কতজন সুস্থ হয়েছেন সে তথ্য বুলেটিনে জানানো হয়নি। বুধবার পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ৩৬১ জন সুস্থ হয়ে ওঠার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।