কওমি আলেমরা তাদের ছাত্রদের ব্যবহার করে তাবলিগ দখল করতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মাওলানা সাদপন্থী তাবলিগের সাথীরা। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সাদপন্থী তাবলিগের মুরব্বি মাওলানা আশরাফ আলী বলেন, তাবলিগ নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। কওমি আলেমরা চাচ্ছে তাবলিগের নেতৃত্ব শুধু কওমি মাদরাসা শিক্ষকরা দেবে, সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত তাবলিগের সাথীরা নেতৃত্ব দিক তারা তা চায় না। এ কারণেই বিভাজন তৈরি হয়েছে। আগামীতে এ বিভাজন দূর হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, কওমি আলেমরা যদি তাবলিগ দখলের নীতি থেকে সরে না আসে, টঙ্গীর মাঠ যদি তাদের এককভাবে দিয়ে দেয়া হয় তাহলে ভবিষ্যতে আরো বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আবদুল্লাহ মনছুর, মাওলানা সাইফুল্লাহ, আকরাম হোসেন প্রমুখ।
মাওলানা আশরাফ আলী বলেন, মাওলানা সাদ তাবলিগের সর্বগ্রহণযোগ্য মুরব্বি। যারা তার বিরোধিতা করছেন তারা তাবলিগের মূল চেতনা থেকে দূরে সরে গেছেন। তারা তাবলিগকে রাজনীতিতে ব্যবহার করতে চাচ্ছেন। তাবলিগের সাথীদের ভোট ব্যাংক হিসেবে দেখিয়ে নৌকা মার্কা পেতে চেয়েছিলেন। এ জন্য সরকারও তাদের আনুকূল্য দিচ্ছে।
টঙ্গী ময়দানে সংঘর্ষ তাবলিগের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সংঘর্ষ-সঙ্ঘাত তাবলিগের কাছে কেউ কামনা করে না। যে ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখজনক। এ ঘটনার দেশে ইসলাম প্রচারে সঙ্কট তৈরি হয়েছে। জনমনে তাবলিগের প্রতি অনাস্থা তৈরি করতে পারে। তবে এটা আমরা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি।
সঙ্কট সমাধান প্রসঙ্গে মাওলানা আশরাফ আলী বলেন, দুই পকে পৃথকভাবে কাজের সুযোগ দেয়া ছাড়া এ মুহূর্তে সমাধান দেখছি না। তারা (সাদবিরোধীরা) তাদের মতো কাজ করবে, আমরা আমাদের মতো কাজ করব।
এ সময় তিনি সঙ্কট সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন। দাবিগুলো হলো ১ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাবলিগের উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টঙ্গী মাঠের পুরো নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে নিতে হবে। নির্বাচনের পর উভয়পরে সাথে পরামর্শ করে টঙ্গী মাঠ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কাকরাইল মসজিদে উভয় পক্ষের অবস্থান ও ব্যবহার সমতার ভিত্তিতে নিশ্চিত করতে হবে। একপক্ষ কাকরাইলে থাকলে অন্য পক্ষকে টঙ্গীর ময়দান পরিচালনার ও ব্যবহারের সুযোগ দিতে হবে। বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন মসজিদ বা এলাকায় একপক্ষ অন্য পক্ষকে তাবলিগের কাজে বাধা দিতে পারবে না। বাধা দিলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। মাদরাসার ছাত্রদের দিয়ে তাবলিগের কাজে বাধা দেয়া বা রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করা যাবে না। দারুল উলুম দেওবন্দ অধ্য মুফতি আবুল কাসেম নোমানী এবং শিক্ষক ও পরিচালক মাওলানা আরশাদ মাদানী উভয়ই বলেছেন, দারুল উলুম দেওবন্দ তাবলিগের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো পক্ষে কথা বলবে না। আমরা চাই, আমাদের দেশের আলেমরাও কথায় ও কাজে দারুল উলুম দেওবন্দের সাথে ঐকমত্য পোষণ করেন। বিদেশী মেহমানদের নিরাপত্তা দিতে হবে। বাংলাদেশে তাবলিগ রাজনীতিমুক্ত রাখতে হবে।