মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে পুরো পৃথিবীর মানুষ আজ ঘর বন্দি। ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বাংলাদেশেও চলছে লকডাউন। খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউই বাইরে যেতে পারছে না। এমন সময় চরম বিপদে পড়েছে নি¤œ আয়ের মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া এমন অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা এই সময় কাটিয়ে উঠতে পারছে না। অন্যদিকে তারা আত্মসম্মানের ভয়ে কারো কাছে সাহায্যও চাইতে পারছে না। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) এমন আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারকে সাহায্য করেছে বাকৃবির টিম ভ্যালেন্টাইন।
জানা যায়, গত ২১-২৪ এপ্রিল একটি গুগল ফর্মের মাধ্যমে সহায়তার জন্যে আবেদন করতে বলা হয়। এই সময়ে ৩২ জন আবেদন করে। পরবর্তীতে তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে টিম ভ্যালেন্টাইন। পরে তাদের পারিবারিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে তাদের দুইটি তালিকায় ( অধিক সংকট, অপেক্ষাকৃত কম সংকট) ভাগ করে আর্থিক সহায়তা পাঠানো হয়। অধিক সংকট তালিকায় ১১ জনকে তিন-চার হাজার টাকা এবং অপেক্ষাকৃত কম সংকট তালিকায় ২১ জনকে এক হাজার টাকা করে মোট ৬৩,১৫০ টাকা অর্থ সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। তবে সম্পূর্ণ গোপনীয়তা বজায় রেখেই এই সহায়তা প্রদান করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে এবং ১৪ ফেব্রæয়ারিতে টিম ভ্যালেন্টাইনের ফান্ডিংয়ের ২০,৫০০ টাকাসহ মোট ৬৩,১৫০ টাকা সহায়তার জন্যে সংগ্রহ করা হয়।
এ বিষয়ে টিম ভ্যালেন্টাইনের সদস্য আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, টিম ভ্যালেন্টাইন বিশ্বাস করি স্থায়ী সমাধানে। কিন্তু এবারের এই সমস্যার কোন সমাধান আমাদের কারো জানা নেই। তাই সামনে আর বেশি কিছু না ভেবেই শুরু করি আমাদের এই কর্মসূচি। এই কাজের অভিজ্ঞা থেকে আমরা বুঝেছি, আমাদের ক্যাম্পাসের আরো অনেক বন্ধু, বড় ভাই/ বোন, ছোট ভাই/ বোন রয়েছে যারা এই করোনা সংকটে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে চলছে কিন্তু আত্মসম্মান এর জায়গা থেকে সমস্যার কথা কাউকে বলতে পারছে না। আমাদের পাঠানো এই অর্থের পরিমাণ তাদের বর্তমান অবস্থার সাপেক্ষে সামান্য। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংঘঠন/ স্বেচ্ছাসেবী সংঘঠন বা ব্যক্তিগত জায়গা থেকে যাদের সম্ভব দ্রæতই এইসব শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৪ ফেব্রæয়ারি বাকৃবির পশুপুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল-মামুনের উপদেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল তরুণদের নিয়ে পথ চলা শুরু করে টিম ভ্যালেনটাইন। এককালীন সহায়তার মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত, অসহায় এবং গরীব মানুষদের স্বাবলম্বী করে তোলাসহ সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষাপণ্য ও কাপড় বিতরণের মতো কাজ করে থাকে এ সংগঠনটি।