করোনা পরিস্থিতিতে হজের নিবন্ধন স্থগিত রাখছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। আপাতত সময় আর বাড়ানো হচ্ছে না। হজের ব্যাপারে সৌদি সরকারের পরবর্তী ঘোষণার পরই এ কাজে আবার হাত দেয়া হবে। এ দিকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলতি বছরের এক লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটার মধ্যে ৬৬ হাজারের মতো হজযাত্রীর নিবন্ধন হয়েছে। গত ১ মার্চ থেকে শুরু হয়ে গত দুই মাসের মধ্যে চার দফায় বৃদ্ধি করা সময়ের গতকাল ছিল শেষ দিন।
ধর্ম সচিব মো: নুরুল ইসলাম বলেন, এই পরিস্থিতিতে নিবন্ধন এ পর্যন্ত থাকছে; সময় বাড়ানো হচ্ছে না। হজ নিয়ে তো এমনিতেই অনিশ্চয়তা আছে। এখন সারা পৃথিবীতে কী অবস্থা সবাই তো দেখতে পারছেন। সৌদি সরকার হজের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত কী নেয় সেটা দেখে তারপর যা করার করা হবে।
তিনি বলেন, হজ চালু করা হলেও কত সংখ্যক লোক এ বছর যেতে পারবেন সেটাও একটা বিষয়। তবে এতটুকু নিশ্চিয়তা রয়েছে, যারা টাকা জমা দিয়েছেন তারা প্রতারিত হবেন না।
হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন- হাব নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা আরো আগেই নিবন্ধন স্থগিত চেয়েছিলেন। পাসপোর্ট অফিসে যেতে না পারা এবং ব্যাংকের সব শাখা খোলা না থাকার কারণে লকডাউনের মধ্যে তাদের পক্ষেও নিবন্ধন করা সম্ভব হচ্ছে না। অনিশ্চয়তার কারণে হজযাত্রীদের অনাগ্রহের বিষয়ও রয়েছে এর সাথে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কারোনা পরিস্থিতিতে সরকারি ছুটির মধ্যে হজের নিবন্ধন কার্যক্রম চালু রাখা নিয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলেও কিছু অসন্তোষ ছিল। সর্বশেষ গত ১৬ এপ্রিল সময় বাড়ানোর পর ধর্ম মন্ত্রণালয় সমালোচনার মুখে পড়ে যার ফলে নিবন্ধন স্থগিত রাখা হচ্ছে।
নিবন্ধনের সময় সর্বশেষ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। ঘোষণায় শেষবারের মতো এই সময় বাড়ানোর কথা জানানো হয়। অন্যান্য বছর হজের নির্ধারিত কোটা সংখ্যক নিবন্ধনের জন্য প্রাক নিবন্ধিত হজযাত্রীদের ক্রমিক তালিকা থেকে বার বার সুযোগ দেয়া হয়। এ বছর ধর্ম মন্ত্রণালয় একইভাবে অগ্রসর হতে চেয়েছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে হজের অনিশ্চয়তার কারণে নিবন্ধনে ভাটা পড়ে।
সৌদি সরকার পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত হজের কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে জানায় মার্চ মাসে। তবে ধর্ম মন্ত্রণালয় বিমান ভাড়া ও সার্ভিস চার্জ বাবদ এক লাখ ৫১ হাজার ৯৯০ টাকা এজেন্সির নির্ধারিত ব্যাংক একাউন্টে জমা নিশ্চিত করে হজযাত্রীদের নিবন্ধন চলমান রাখে।
চতুর্থ দফায় বাড়ানো সময়ের শেষ দিনে গতকাল সরকারি-বেসরকারি মিলে মোট নিবন্ধনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৪,৫৯৪ জনে। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার ৩,৪৫৭ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ৬১,৫৯৪ জন। এ বছর বাংলাদেশের জন্য হজের কোটা এক লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার ১৭ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার এক লাখ ২০ হাজার। এই হিসাবে গতকাল পর্যন্ত মোট হজযাত্রীর ৪৭ শতাংশের নিবন্ধন হয়েছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩০ জুলাই (৯ জিলহজ) এ বছরের হজ পালিত হওয়ার কথা। তবে বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতির কারণে এই বছরের হজ স্থগিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।