নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বিয়ের প্রলোভনে এক কিশোরী (১৬) কে রাতভর ধর্ষণ ও স্বামীর স্বীকৃতি না-দেওয়ায় ওই কিশোরী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের মাসকান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রাতভর ধর্ষণ ও পরের দিনে ধর্ষকের পিতা-মাতা কর্তৃক মানসিক নির্যাতনের একপর্যায়ে বুধবার সকাল ১১টার দিকে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ওই কিশোরী। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, দুর্গাপুর ইউনিয়নের মাসকান্দা গ্রামের মো. আব্দুল মিয়ার মেয়ের সাথে আব্দুল জলিলের পুত্র মো. অলি মিয়া দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। ওই সম্পর্কের জেরে বেশ কিছুদিন শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে অলি। এরই প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভনে অলি মিয়া তার বাড়িতে নিয়ে রাতভর ধর্ষণ করে। পরদিন সকালে ছেলের বাবা-মা বিষয়টি জানতে পেরে মেয়েকে তাদের বাড়ি চলে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ছোবান মিয়াসহ ছেলের বাবা-মায়ের উপস্থিতিতে মেয়ে তাদের সম্পর্কের কথা জানায়। ওই কথা শুনে মেয়েকে অলির বাবা-মা মিলে বেদম প্রহার করে ওই মেম্বারের হাতে তুলে দেয়।
ইউপি মেম্বর কিশোরীকে তার পিতার কাছে বুঝিয়ে দেয়। এর মধ্যে ছেলে ওই মেয়ের সাথে কোনো যোগাযোগ না করায় অভিমানে বুধবার সকালে ঘরের দরজা বন্ধ করে বিষপান করে। বেশ কিছুক্ষণ দরজা বন্ধ থাকায় ওই ঘর থেকে মেয়েকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই দিন রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে কর্তব্যরত চিকিৎসক। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে মৃত্যু হয়।
কিশোরী মৃত্যুর খবর পেয়ে অভিযুক্ত অলি মিয়া ও তার পরিবারের লোকজন গাঢাকা দিয়েছে। তাদের মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।