ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের পিসিআর ল্যাবে বৃহস্পতিবার ৩ ধাপের করোনা ২৮২ টি নমুনা পরীক্ষায় মোট ১০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো ৪৭১টি নমুনা পরীক্ষায় ২জনের দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে শনাক্ত হওয়া কোভিড-১৯ আক্রান্তরা হলেন- ময়মনসিংহ বিভাগের ৯জন- ময়মনসিংহ সদরের চরপাড়ায় ১ নারী, নেত্রকানার মদনের ২জন, আটপাড়ার ১ জন, শেরপুরের ১ ডাক্তার, জামালপুর সদরের ১জন, সরিষাবাড়ির ২জন ও ইসলামপুরের ১জন। সিলেট বিভাগরে সুনামগঞ্জের ১জনের দেহেও করোনা শনাক্ত হয়েছে।
অপরদিকে আইইডিসিআরে পাঠানো ৪৭১টি নমুনা পরীক্ষায় ময়মনসিংহের জামালপুরের ২জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তারা মেলান্দহ উপজেলার বাসিন্দা।
অপরদিকে ২৯ ও ৩০ এপ্রিলের নমুনা পরীক্ষায় জামালপুরে ক্লিনিক মালিক ও ওষুধ বিক্রেতাসহ নতুন করে আরও ৪ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এই নিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৫ জনে।
ময়মনসিংহের পিসিআর ল্যাব থেকে পাঠানো ২৯ এপ্রিলের ২য় প্রতিবেদন ও ৩০ এপ্রিলের ১ম ও ২য় প্রতিবেদনে এই ৬ জনের দেহে কোভিড-১৯ পজেটিভ উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
আক্রান্তদের মধ্যে মেলান্দহ উপজেলায় দুজন, সরিষাবাড়ি উপজেলায় দুজন, জামালপুর সদরে ও ইসলামপুরে একজন করে।
জামালপুরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহফুজুর রহমান সোহান বলেন, ‘নতুন করে করোনা শনাক্ত হওয়া সদরের একজন গৃহিনীকে তার নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে এবং সরিষাবাড়ীর দুই ব্যক্তিকে জামালপুরে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। ইসলামপুরে শনাক্ত হওয়া ওই গার্মেন্টকর্মীকে খুঁজে বের করার জন্য সব রকমের প্রচেষ্টা চলছে।’
সরিষাবাড়ী উপজেলায় আক্রান্ত দুজন পুরুষের একজন হলেন মাতৃছায়া ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের ২৬ বছর বয়সী মালিক, অন্যজন হলেন বিসমিল্লাহ ফার্মেসীর ২৪ বছর বয়সী ওষুধ বিক্রেতা। তাদের দুজনের বাড়ি পৌরসভার ধানাটা এলাকায়। এ নিয়ে সরিষাবাড়ীতে আক্রান্ত বেড়ে হলো ৬ জন।
মেলান্দহ উপজেলার দুরমুঠের রোকনাই গ্রামের দুই গার্মেন্টস কর্মী। একজনের বয়স ১৮ ও আরেকজনের বয়স ১৬ বছর। তারা নারায়ণগঞ্জে একটি গার্মেন্টসে কাজ করতেন। ১৭ এপ্রিল তারা নিজ বাড়িতে আসেন। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করেন ২০ এপ্রিল। এ নিয়ে মেলান্দহে আক্রান্ত বেড়ে ৫ জনে দাঁড়াল।
জামালপুর সদরে শহরের কলেজ রোডে খামারবাড়ি এলাকায় ২৮ বছর বয়সি এক নারী। এই নিয়ে জামালপুর সদরে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৯ জনে। সদর উপজেলায় এপর্যন্ত সবচেয়ে বেশী আক্রান্ত হয়েছে।
ইসলামপুর পৌর এলাকার ফকিরপাড়া গ্রামে ২৮ বছর বয়সী এক নারী গার্মেন্টকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি ঢাকার মাদারটেকে এক পোষাক কারখানায় কাজ করতো। এই নিয়ে ইসলামপুরে আক্রান্তের সংখ্যা হলো ৭জন।
মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ফজলুল হক জানান, মেলান্দহে নতুন দুই আক্রান্ত নারী নারায়ণগঞ্জ ফেরত। তারা গার্মেন্টস কর্মী। ১৭ এপ্রিল তারা নিজ বাড়িতে এসেছেন। খবর পেয়ে ২০ এপ্রিল ওই দুজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিহাব উদ্দিন আহমদ জানান, সরিষাবাড়ীতে করোনা শনাক্ত ব্যক্তিরা সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার মাজনাবাড়ি গ্রামের ওই পিতাপুত্রের সংস্পর্শে এসেই আক্রান্ত হয়েছেন। তারা সরিষাবাড়ীর ইউনিল্যাব ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন। ওই দুজন রোগীর সংস্পর্শে যারাই এসেছেন তারাই শনাক্ত হচ্ছেন। নতুন শনাক্ত দুজনের বাড়ি ধানাটা এলাকায়।
জামালপুরে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের মোট আইসোলেশনে রয়েছেন ৩১ জন। হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ২০ জন। একজনকে ময়মনসিংহ এসকে হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।