ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে স্বামী-সতীনের বিরুদ্ধে সুমা আক্তার (২৭) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার বিকেলে পার্শ্ববর্তী শ্রীপুর উপজেলার পশ্চিম মুলাইদ গ্রামে। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার শ্রীপুর থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
নিহত সুমি আক্তার গফরগাঁওয়ের পাগলা থানাধিন উস্থি ইউনিয়নের বড়বাড়ি গ্রামের রাজমিস্ত্রী দুলাল মিয়ার মেয়ে ও পাঁচবাগ ইউনিয়নের মধ্য লামকাইন গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে রাসেল মিয়ার স্ত্রী। পোষাক কম্পানিতে চাকরির সুবাদে তারা শ্রীপুর উপজেলার পশ্চিম মুলাইদ গ্রামে বসবাস করতেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর পূর্বে উপজেলার পাগলা থানাধিন পাঁচবাগ ইউনিয়নের মধ্য লামকাইন গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে রাসেল মিয়ার সাথে উস্থি ইউনিয়নের বড়বাড়ি গ্রামের রাজমিস্ত্রী দুলাল মিয়ার মেয়ে সুমি আক্তারে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সুমির বাবা দুলাল মিয়া মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে রাসেলকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্ম নেয়। পোষাক কম্পানিতে চাকরির সুবাদে তারা শ্রীপুর উপজেলার পশ্চিম মুলাইদ গ্রামের নূরুল হক হাজীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। গত এক বছর পূর্বে রাসেল গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এর পর থেকেই সংসারের ছোটখাট বিষয় নিয়ে রাসেল সুমি আক্তারকে মারধর করত। এক পর্যায়ে সুমি রাসেলের দ্বিতীয় বিয়ের কথা জেনে প্রথমে আপত্তি করলেও পরে নিরবে মেনে নেয়। কিছুদিন পূর্বে রাসেল দ্বিতীয় স্ত্রীর জন্য একই এলাকায় বাসা ভাড়া নেয় এবং সুমি আক্তারকে অত্যাচার-নির্যাতন করে তাড়ানোর ফন্দি আঁটে। গতকাল বুধবার সকালে সুমি আক্তার তার বাবার সাথে মোবাইলে কথা বলে। বিকেলে রাসেল ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী ময়না মিলে সুমিকে মারধর করে। এতে সুমি গুরুতর অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। সন্ধ্যায় রাসেল সুমির স্বজনদের ফোন করে জানায় অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে সুমি মারা গেছে এবং লাশ দাফনের জন্য লামকাইন গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
পরে লামকাইন গ্রামের বাড়িতে লাশ রেখে রাসেল পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে পাগলা থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা দুলাল মিয়া শ্রীপুর থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
দুলাল মিয়া বলেন, রাসেল আর তার নতুন বৌ ময়না আমার মাইয়ারে অত্যাচার কইরা মারছে। আমি বিচার চাই।
এ বিষয়ে পাগলা থানার অফিসার ইনচার্জ শাহীনুজ্জামান খান বলেন, শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জের সাথে কথা হয়েছে। ঘটনাস্থল শ্রীপুর তাই তারা লাশ নিয়ে যাবেন এবং অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত আলী বলেন, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।