গাজীপুরে ছাটাইয়ের প্রতিবাদে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে বুধবার বিকেলে বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেছে গাজীপুরের দুটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এতে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে শিল্প পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার জানান, গাজীপুরের দু’হাজার ৭২টি কারখানার মধ্যে বুধবার পর্যন্ত ৬৩৮ টি কারখানা খোলা হয়েছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের শরীফপুর এলাকার টেক্স টেক কোম্পানী লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বুধবার সকালে কাজে যোগ দিতে কারখানার গেইটে আসে। এসময় কাজে যোগ দেয়ার জন্য সব শ্রমিককে কারখানায় প্রবেশ করতে দেওয়া হলেও ৬০জন শ্রমিকের কার্ড জমা নিয়ে তাদেরকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। দীর্ঘক্ষণ গেইটে অপেক্ষার পরও তারা ভিতরে প্রবেশ করতে না পেরে তাদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়। এ কারখানায় প্রায় ৯শ’ শ্রমিক কাজ করেন। করোনাভাইরাস সংক্রমনের বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই ৬০ শ্রমিককে ছাটাই করা হয়েছে এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এসময় ছাটাইয়ের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। বিকেল পর্যন্ত গেইটে অবস্থান করে তারা কর্তৃপক্ষের কোন সাড়া পায় নি। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার পার্শ্ববর্তী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপর অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর ইস্কান্দর হাবিব জানান, শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার দ্রুত ঘটনাস্থলে চলে আসেন এবং শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি কারখানার মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ছাটাই প্রক্রিয়া প্রত্যাহার করে ওই ৬০ শ্রমিককে কাজে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ জানান। পরে কারখানার মালিকপক্ষ বৃহষ্পতিবার হতে ওই ৬০ শ্রমিককে কাজে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলনরত শ্রমিকরা প্রায় আধা ঘন্টা পর বিকেল তিনটার দিকে মহাসড়কের অবরোধ তুলে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এছাড়াও মহানগরীর টঙ্গীর আয়েশা গালিয়া পোশাক কারখানার শ্রমিকরা একইদিন বিক্ষোভ করেছে। ওই কারখানার কয়েক শ্রমিককে ছাটাই করা হবে এমন সংবাদ পেয়ে তারা সকাল হতে কারখানার গেইটে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে তারা অবরোধের জন্য পার্শ্ববর্তী ঢাকা-মংমনসিংহ মহাসড়কে যাওয়ার চেষ্টা করে। শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টও ইসলাম হোসেন জানিয়েছেন।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার জানান, করোনা ভাইরাস সংক্রমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গাজীপুরের দু’হাজার ৭২টি কারখানা রয়েছে। এরমধ্যে বুধবার পর্যন্ত বিজিএমইএ’র ৩৫১টি, বিকেএমইএ’র ৪১টি, বিটিএমইএ’র ৩৬টি এবং অন্যান্য ২১০টি কারখানাসহ মোট ৬৩৮টি কারখানা খোলা হয়েছে। এদিন পর্যন্ত জেলার এক হাজার ৮৩৪টি কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতনভাতা এতোমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। অবশিষ্ট ২৩৮টি কারখানার শ্রমিক কর্মচারীদের পাওনাদি নানা অজুহাতে এ পর্যন্ত পরিশোধ করা হয়নি। তবে জেলায় এ পর্যন্ত কোন শ্রমিকের দেহে করোনা ভাইরাস সনাক্ত হয়নি।

Share this post

scroll to top