ময়মনসিংহের একই পরিবারের ৪জনকে গাজীপুরে গলা কেটে হত্যা

Kill

গাজীপুরের শ্রীপুরে মা ও তিন সন্তানকে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) মামলা হয়েছে। অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে নিহত গৃহবধূ স্মৃতি ফাতেমার শ্বশুর আবুল হোসেন বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানিয়েছেন, এ ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। হত্যার কারণ অনুসন্ধানে একাধিক টিম কাজ করছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শ্রীপুরের তেলিহাটি ইউনিয়নের জৈনা বাজার আব্দুল আউয়াল ডিগ্রি কলেজ রোড (আবদার) এলাকার মালয়েশিয়া প্রবাসী রেজোয়ান হোসেন কাজলের দোতলা বাড়ির একটি কক্ষ থেকে তার দুই মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রীর জবাই করা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে একজনের মরদেহ খাটের ওপর এবং বাকিদের মেঝেতে পড়েছিল। এসময় ঘর থেকে ছোরা ও একটি বটি উদ্ধার করা হয়।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, কাজলের পরিবারের বাকি সদস্যরা তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার লংগাইর ইউনিয়নের গোলাবাড়ী গ্রামে থাকেন। প্রায় ২০ বছর আগে ইন্দোনেশিয়ায় থাকাকালে কাজল সেদেশের নাগরিক স্মৃতি ফাতেমাকে বিয়ে করেন। পরে দেশে ফিরে জৈনাবাজার এলাকার তার ছোট ভাই জাহিদ হাসান আরিফের সঙ্গে সাড়ে ৫ শতক জমি কিনে দোতলা বাড়ি বানান। পাশেই তার ভাই আধাপাকা বাড়ি নির্মাণ করে পাশাপাশি বসবাস করতেন। পরে স্ত্রী-সন্তাদের রেখে মালয়েশিয়া পাড়ি জমান কাজল।

ঘটনার আগের দিন বুধবার (২২ এপ্রিল) স্মৃতি ফাতেমা তার দেবর আরিফকে বৃহস্পতিবার সকালে বাজার করে দেওয়ার কথা বলেন। সকাল ১০টার দিকে বাসায় বাজার নিয়ে ডাকাডাকি করে কোনও সাড়া শব্দ না পেয়ে আরিফ ফিরে আসেন। পরে দুপুর ৩টার দিকে তিনি আবার ডাকাডাকি করেন। তখনও সাড়া না পেয়ে আরিফ তার ছেলে নাবিলকে (১০) তার টিনশেড ঘরের চালের ওপর দিয়ে ভেতরে যেতে বরেল। সে চালের ওপর দিয়ে উঠে জানালা দিয়ে ঘরের মধ্যে লাশ দেখতে পায়। পরে বাড়ির নিচতলার পেছনের দরজা খোলা পেয়ে ভেতরে ঢুকে দোতলার ঘরে গিয়ে ভাবি স্মৃতি ফাতেমা, দুই ভাতিজি সাবরিনা সুলতানা নূরা (১৬), হাউরিন হাওয়া (১২) ও প্রতিবন্ধী ভাতিজা ফাদিল (৮) এর জবাই করা লাশ দেখতে পান। এসময় ঘরে থাকা লাগেজ এবং কিছু আসবাবপত্র এলোমেলো অবস্থায় ছিল। আরিফ ঘটনাটি তাৎক্ষণিক স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আশপাশের লোকজনকে অবহিত করেন। ইউপি সদস্য তারেক হাসান বাচ্চু হত্যার ঘটনাটি শ্রীপুর থানা পুলিশকে অবহিত করেন।

ওসি লিয়াকত আলী জানান, খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে মরদেহগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার করতে পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম কাজ করছে।

Share this post

scroll to top