অরিত্রি অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার মামলার আসামি ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) আব্দুল বাতেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যার পর মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান আব্দুল বাতেন।
তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। খুব শিগগিরই তাদের গ্রেফতার করা হবে।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রভাতি শাখার প্রধান জিনাত আখতার এবং অরিত্রীর শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে পল্টন থানায় মামলা করেন অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী।
ইতিমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে র্যাব-পুলিশকে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই মামলাটি তদন্তের জন্য গোয়েন্দা পুলিশকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে অরিত্রির আত্মহত্যার ঘটনায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে তাদের এমপিও বাতিলের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্তে শিক্ষার্থী অরিত্রি আত্মহননের প্ররোচনার জন্য এ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ায় তাদের বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলাসহ অন্য আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় দুদিন ধরে ভিকারুননিসায় বিক্ষোভ চলছে। মঙ্গলবার বিক্ষোভের প্রথম দিনে শিক্ষামন্ত্রী স্কুলে গিয়ে এ ঘটনার সঠিক বিচারের আশ্বাস দেন।
পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেও শিক্ষামন্ত্রী তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেন।
প্রসঙ্গত, নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রির বিরুদ্ধে স্কুল কর্তৃপক্ষ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগ এনেছিল। এ জন্য অরিত্রির মা-বাবাকে ডেকে নেন ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ।
তাদের ডেকে মেয়ের সামনেই অপমান করে বলেন, সিদ্ধান্ত হয়েছে অরিত্রিকে নকলের অভিযোগে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া হবে। এ অপমান সইতে না পেরে বাসায় এসে অরিত্রি আত্মহত্যা করে।
পুলিশ ও পরিবারের তথ্যানুযায়ী, সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় রাজধানীর শান্তিনগরে সাততলা ভবনের সপ্তম তলায় নিজ ফ্ল্যাটে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় অরিত্রিকে পাওয়া যায়।
এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে চিকিৎসকরা অরিত্রিকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ছাত্রীর গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদরে। অরিত্রির বাবা দিলীপ কুমার একজন সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী।