ময়মনসিংহে কোন এনজিও আগামী জুন মাস পর্যন্ত জোর করে কিস্তি নিতে চাইলে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির ময়মনসিংহ বিভাগের সমন্বয়কের নাম্বারে কল দিয়ে অভিযোগ দিতে পারেন। ময়মনসিংহ বিভাগের সমন্বয়ক মোহাম্মদ কামাল হোসেনের মোবাইল নাম্বার ০১৭১০৮০৬৩০৬।
করোনা ভাইরাসের প্রভাবে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য স্থাবির হয়ে পড়েছে। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সবকিছু বন্ধ করে বাড়িতে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি। দেশের যেসব ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এনজিও বা ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন সেসব প্রতিষ্ঠান আগামী জুন পর্যন্ত কোনো কিস্তি জোর করে আদায় করতে পারবে না, তবে কেউ সেচ্ছায় দিলে নিতে পারবেন উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সংস্থাটি।
জারি করা প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন হচ্ছে কিনা তা দেখভালে সম্প্রতি মনিটরিং সেলও গঠন করেছে অথরিটি। মনিটরিং সেল গঠন সংক্রান্ত অফিস আদেশে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস বাংলাদেশেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। এ প্রেক্ষিতে ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানসমূহের মাঠ পর্যায়ের কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
অথরিটি ইতিমধ্যে ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানসমূহের করণীয় বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। উল্লেখিত সার্কুলার এবং উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য অথরিটি ৯ সদস্যের মনিটরিং সেল গঠন করেছে। প্রত্যেক সদস্যদের মোবাইল নম্বরও দেয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র ঋণ সেক্টর সম্পর্কিত যে কেউ কোনো কিছু জানতে চাইলে কমিটির সদস্যেদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে।
ঢাকার এক পরিচালককে সমন্বয়ক এবং আট বিভাগের আট উপপরিচালককে সদস্য করে এ সেল গঠন করা হয়েছে। সেলের সমন্বয়ক হচ্ছেন অথরিটির পরিচালক মোহাম্মদ ইয়াকুব হোসেন, মোবাইল নম্বর ০১৮১৫৫০৩৯৭৫।
এছাড়া কমিটির অন্য আট সদস্য হচ্ছেন- উপপরিচালক কে এ এম এম রইসুল ইসলাম, ০১৭১৬৪২৭২১৭ (ঢাকা), মো. জিল্লুর রহমান ০১৯১২২৬৭২৭৩ (চট্টগ্রাম), মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, ০১৭১২০৮২০৫৭ (রাজশাহী), মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, ০১৭১১৪৬১৩০৩ (বরিশাল), মোহাম্মদ কামাল হোসেন, ০১৭১০৮০৬৩০৬ (ময়মনসিংহ), প্রদীপ কুমার ঘোষ, ০১৭১৬৫১৫২১৫ (রংপুর), মো. আবু বকর সিদ্দিক, ০১৭১১৭০৯৪৫৮ (খুলনা) এবং মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, ০১৫৫২৪৪০৯২১ (সিলেট)।
গঠিত সেলের কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, অথরিটি কর্তৃক প্রকাশিত সার্কুলারের নির্দেশনার বাস্তবায়ন ও স্পষ্টীকরণ বিষয়ে ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ কার্যক্রম ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ গৃহীত বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের নির্দেশাবলীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম পরিচালনা বিষয়ক পরামর্শ প্রদান ও বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করা।
কার্যপরিধিতে আরও বলা হয়, প্রয়োজন অনুযায়ী স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা, গ্রাহক স্টেকহোল্ডারদের অভিযোগ বিষয়ে ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানসমূহের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা, বর্ণিত বিষয়াবলী বিষয়ে সমন্বয়কের মাধ্যমে অথরিটিকে অবহিত করা।
আগামী জুন পর্যন্ত নতুন করে কাউকে ঋণ খেলাপি ঘোষণা করা যাবে না উল্লেখ করে গত ২২ মার্চ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে সনদপ্রাপ্ত সব ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি।
এরপরও এ প্রজ্ঞাপনের ভুল ব্যাখা দিয়ে দেশের কিছু এলাকায় ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতাকে কিস্তি পরিশোধে বাধ্য করা হচ্ছে। বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য গত ২৫ মার্চ আরও একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে অথরিটি।
এতে বলা হয়, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ঋণ গ্রহীতাদের আর্থিক অক্ষমতার কারণে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি অপরিশোধিত থাকলেও তাদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত প্রাপ্য কোনো কিস্তি বা ঋণকে বকেয়া বা খেলাপি দেখানো যাবে না। অর্থাৎ এই সঙ্কটময় সময়ে ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণগ্রহীতাদের কিস্তি পরিশোধে বাধ্য করা যাবে না। তবে কোনো গ্রাহক স্বেচ্ছায় ঋণের কিস্তি পরিশোধে ইচ্ছুক হলে সেক্ষেত্রে কিস্তি গ্রহণে কোনো বাধা থাকবে না। একই সঙ্গে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি নতুন করে কাউকে ঋণ দিতে চায় সেটা দিতে পারবে।