জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখ্পাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, প্রশাসন ও পুলিশ নিয়ে বিএনপি যে অভিযোগ করেছে তা সুস্পষ্ট এবং নির্দিষ্ট। এখানে ‘অতি’ কিছু নেই।
এর আগে, প্রশাসন ও পুলিশ নিয়ে বিএনপির ‘ঢালাও অভিযোগ’ আমলে নেওয়া হবে না বলে মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
তবে বিএনপি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
নির্বাচন কমিশনের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকারের শেষ দিন বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হচ্ছে আমরা যে অভিযোগ করেছি সেটা নাকি ঢালাও অভিযোগ। আমরা বলতে চাই ঢালাও অভিযোগ বিএনপি করে না। বিএনপি সুস্পষ্ট অভিযোগ করেছে, একেবারে নির্দিষ্ট অভিযোগ করেছে।’
‘আমরা সবসময় বলেছি যে, নির্বাচন কমিশনকে অবশ্যই নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে। এটা তার সাংবিধানিক দায়িত্ব এবং সেই দায়িত্ব যদি পালন করতে ব্যর্থ হয় তার জন্য জনগণের কাছে, জাতির কাছে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। আমরা আশা করি, আমরা বিশ্বাস করি যে, নির্বাচন কমিশন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করবে এবং জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা, তা পূরণ করতে সক্ষম হবে।’
দমনপীড়নে ‘ধানের শীষের’ জোয়ার সরকার রুখতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।
‘তফসিল ঘোষণার পরও গ্রেপ্তার-হয়রানি চলছে অব্যাহতভাবেই। এই গ্রেপ্তার হয়রানিকে উপেক্ষা করেই যে সাড়া জনগণ দিচ্ছে, সেই সাড়ায় এটাই প্রমাণিত হচ্ছে যে, ধানের শীষের যে জোয়ার উঠেছে সেটাকে কেউ রোধ করতে পারবে না।’
জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের আসন ভাগাভাগির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা খুব শিগগিরই এটা করব। সময়মতই আপনারা তা জানতে পারবেন। আমরা আমাদের জোটের সাথে বসব, আমাদের চূড়ান্ত মনোনয়ন হবে। সবই সময়মতো হবে। নির্বাচন করতে যখন নেমেছি তখন সঠিকভাবেই নির্বাচন করব।’
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর জেলার নির্বাচনী আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী ২৩৩ জনের সাক্ষাৎকার শেষ হয় এদিন।
ফখরুল বলেন, ‘যারা সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন তারা দলের অনেকেদিনের পরীক্ষিত নেতাকর্মী, রাজপথের লড়াকু সৈনিক। তাদের এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংগঠন তৈরি হবে সেটা অবশ্যই নির্বাচনকে জয়যুক্ত করতে সক্ষম হবে।’
‘আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের যে সাড়া আমরা দেখতে পারছি, স্রোতের মতো যে ঢল নামছে, এতে করে এই স্বৈরাচারী সরকারকে নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা অবশ্যই সরিয়ে দিতে সক্ষম হব।’
ঢাকা বিভাগের সাক্ষাৎকারের মধ্য দিয়ে চারদিনের সাক্ষাৎকার পর্ব শেষ হবে। গত ১৮ নভেম্বর থেকে রংপুর বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দিয়ে সাক্ষাৎকার শুরু হয়।
চার দিনের মনোনয়ন বোর্ডে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
রফিকুল ইসলাম মিয়া গত তিনটি সাক্ষাৎকারে থাকলেও গতকাল একটি মামলায় সাজার পর তিনি গ্রেপ্তার হন।
গত ১৮ ও ১৯ নভেম্বর লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইন্টারনেটে ভিডিওকলে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাথে সাক্ষাৎকারে কথা বললেও সোমবার স্কাইপ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি অন্য ভিডিওকল অ্যাপ ব্যবহার করে প্রার্থীদের সাথে কথা বলছেন।