স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার কে এই প্রতারক শরীফ? সে ডিজিটাল পদ্ধতিতে মানুসকে জিম্মি করে কয়েক কোটি টাকা আত্নসাৎ করেছে। সে এখন পলাতক। শরীফের ০১৯৯২২২৪০৪৪, ০১৭৬৬৫৮৬৬৬৬ এসব নাম্বারে ফোন দিলে সে স্থানীয় তারেক নামের এক নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে প্রভাব দেখানোর চেস্টা করে। সে মুক্তাগাছার লক্ষিখোলা গ্রামের ৪৫/০ এলাকার আব্দুল কাইয়ুম খান ও শিরীন খান এর ছেলে। তাকে ধরিয়ে দিতে পারলে নগদ টাকা ঘোষণা করেছে কয়েকজন ভূক্তভোগী।
একাধিক সূত্র মতে, সে অসংখ্য লোকজনের সাথে বিভিন্নভাবে প্রতারণা করছে। দেশের সুনামধন্য ডোমেইন-হোস্টিং প্রোভাইডার বিডিওয়েবস.কম এর মালিক মুহম্মদ আখতারুজ্জামান জানান, প্রায় ৭/৮ মাস আগে শরীফ খান আমাকে বলেছিল তার কিছু অনলাইনের প্রোডোক্ট আছে সেল করে দিল তার উপকার হত। তার উপকারের লক্ষেই, তার প্রায় ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকার প্রোডাক্ট সেল করে দিয়েছি কিন্তু প্রোডাক্ট নামে সে প্রতারণা করেছেন আমার সাথে।
ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, খুব শিঘ্রেই বসে ফায়সালা করা হবে। কিন্তু এভাবে প্রায় ৬ মাস চলে যাচ্ছে সে কোনভাবেই আমার সাথে বসতেছে না। যথারীতি বলে যাচ্ছে, আমি বাড়িতে আসছি, ঢাকায় এসে ফায়সালা করব। আজকে গাড়িতে উঠছি ঢাকার উদ্দেশ্যে এসে নক দিব। অবার কিছুদিন পর, আগামীকাল কাল শনিবার অফিসে যাব। পরেরর দিন ফোন দিলাম অফিসে কখন যাবেন? বলল, সন্ধ্যার পর যাব। সন্ধ্যার পর থেকে আর ফোন ধরেনা!
অতঃপর ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে পোস্ট দেয়ায়, নিজে ফোন দিল এবং বলল খুব শিঘ্রেই সলিউশন করব। কিন্তু কোন সলিউশন করছে না যোগাযোগও নাই।
কিছুদিন পর ফোন দিলাম; বলল, একটু ব্যস্ততায় আছি ফ্রী হয়ে ফায়সালা করব। আবার কিছুদিন পর নক দিলাম, তখন বলল, ঈদের পরে ফায়সালা করব। ঈদ শেষ হওয়ার পর নক দিলে বলে, নারায়ণগঞ্জ এবং মতিঝিলে যাওয়া-আসার উপর আছি। ফ্রী হয়ে নিক দিব। এভাবেই প্রতারক শরীফ খান দিনের পর দিন মাসের পর মাস।
এভাবেই প্রতারণার বর্ননা দিচ্ছিলেন বিডি ওয়েবস এর স্বত্বাধিকারী মোঃ আকতারুজ্জামান। তিনি অত্যন্ত ক্ষোভের সাথে বলেন, তাকে যে ধরে দিতে পারবে তাকে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দিব। যোগাযোগের নাম্বার ০১৭২১৪৯৫৮৭৮।
শুধু এক আখতারুজ্জামানই না অসংখ্য লোকের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছেন প্রতারণ শরীফ খান। আরো কয়েকজনের সাক্ষাৎকার-
২. টঙ্গী থেকে মারুফ হাসান নামে এক ভদ্রলোক জানান, প্রতারণ শরীফ খানকে ১২ হাজার টাকা দিয়েছি আমার ওয়েব সাইটের জন্য সব কিছু সমাধান না করেই সে পালাকত। আমি আমার বায়ারের সাথে ইমেইলে যোগাযোগ করতে পারছি না। ওয়েব মেইল থেকে মেইল যাচ্ছে না। অন্য মেইল থেকে যোগাযোগ করলে বায়ার আমাকে স্পামার মনে করে রিস্পোন্স করে না। এভাবে আমার কোম্পানী/ব্যবসার বিরাট ধস নেমে আসে।
৩. মিরপুর-১৪ জামিউল উলুম মাদরাসার সামনে মিনি ফাস্ট-ফুডের জনৈক এক দোকানদার। তার কাছে বাকিতে বার্গার, স্যুপ ইত্যাদি খেয়েছে, ১ বছর পার হচ্ছে কিন্তু এ টাকা এখনও পরিশোধ করে নাই। তবে আমার কোন আপত্তি নাই। খাওয়ার জিনিষ খেয়েছে হজমও হয়েছে।
৪. মিরপুর ইব্রাহীমপুর থেকে শামসুল আলম জানান, শরীফ আমার থেকে একটি আংটি ক্রয় করেছেন কিন্তু আংটির টাকা আজ দিবে কাল দিবে এভাবে ১ বছর ধরে ঘুরাচ্ছেন। তার লেন-দেন এতো খারাপ তা আমার জানা ছিল না।
৫. ওগোবিডি.কম এর মালিক আলাহুদ্দিন আহমেদ অপু জানান, তাকে কোনভাবেই বিশ্বাস করা যায় না, আমি একবার তাকে আমার ওয়েব সাইটের লগইন দিয়েছিলাম আমার সাইটের কিছু কাজ আপডেট দেয়ার জন্য কিন্তু দেয়ার পর থেকে- সাইট ফেসবুক থেকে ব্লক। এডসেন্স ইনকামও বন্ধ। তাকে ফোন দিলে ফোন ধরে না ফেসবুকেও রেসপন্স করে না। সম্ভবতঃ সে সাইট থেকে আমার ডাটা চুরি করেছ অথবা, সাইট শেল ফাইল ইনপুট করে ভিজিটর ফরওয়ার্ড করেছে। তার জন্য আমার মাসিক ২০-৩০ হাজার টাকার ইনকাম সোর্স বন্ধ হল।