স্ত্রীকে নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে দিয়েছে পাষণ্ড স্বামী। এ ঘটনায় গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দিনাজপুর সদর উপজেলার পশ্চিম দপ্তরিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, যৌতুকের টাকা না পেয়ে জুয়াড়ি স্বামী সুমন (২৩) তার মা ও বোনের সহযোগিতায় ঘরের দরজা বন্ধ করে স্ত্রী সোহাগীকে নির্যাতন করে। একপর্যায়ে মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়। পরে সোহাগীর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে ঘরের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে।
সুমন সদর উপজেলার পশ্চিম দপ্তরিপাড়া এলাকার হাফিজুরের ছেলে।
এ ব্যাপারে নির্যাতিত সোহাগী জানায়, গত ৩ বছর আগে পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় স্বামী সুমন যৌতুক বাবদ ১ লাখ টাকা মূল্যের একটি মোটরসাইকেল দাবি করে। তখন সোহাগীর বাবা যৌতুক হিসেবে ১ম পর্যায়ে সুমনকে নগদ ৩৫ হাজার টাকা দেয়। এরপর থেকেই যৌতুকের বাকি টাকার জন্য স্ত্রী সোহাগীকে মারধর করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিত সুমন।
জানা যায়, সোহাগীর স্বামী সুমন তার শ্বশুরবাড়ি এলাকায় একটি জমি বন্ধক নেয়। বন্ধককৃত জমি বাৎসরিক চাষাবাদের জন্য সোহাগীর বাবার সঙ্গে ৭ হাজার টাকার চুক্তিবদ্ধ হয় সুমন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি চুক্তিকৃত নগদ ৭ হাজার টাকা নিয়ে সোহাগী বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে আসে। স্বামীকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে ৫ হাজার টাকা দেয় সোহাগী। বাকি ২ হাজার টাকা অন্যত্র সরিয়ে রাখায় স্বামী সুমনসহ তার মা ও বোন ক্ষিপ্ত হয়ে সোহাগীকে শারীরিক নির্যাতন করে। একপর্যায়ে সুমনের মা নির্দেশ দেয়, তোর স্ত্রীর মাথার চুল কেটে দিলে শিক্ষা হবে। মায়ের কথা মতো সুমন তার বোন সুমির সহযোগিতায় ঘরের দরজা বন্ধ করে নির্যাতনের একপর্যায়ে মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে সুমনসহ পরিবারের লোকজন জানায়, ৭ হাজার টাকার মধ্যে ২ হাজার টাকা লুকিয়ে রাখার অপরাধে সোহাগীর মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়েছে।
দিনাজপুর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, এ ঘটনায় এজাহারভুক্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।