তানিউল করিম জীম, বাকৃবি প্রতিনিধি : বিভিন্ন সময়ে মারধর এবং ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একাধিক শিক্ষার্থী। এসব ঘটনার সত্যতা যাচাই করে বিচার করার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু দোষীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। নির্যাতনের শিকার কেউ বিচার না পাওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিচারহীনতায় এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে বলে মনে করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, গত ২০ জানুয়ারি ইভটিজিং এবং ছাত্রলীগের এক নেতাকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থী নাসির উদ্দিন, ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী মোবাশ্বের হোসেন ও শামীম রেজা এবং কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী সাফায়েতুল ইসলাম তন্ময়কে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে সাময়িক বহিষ্কারকৃত মোবাশ্বের হোসেন নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। এছাড়াও গত মাসের ২৭ তারিখ রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈশা খাঁ হলের টিভি রুমে ছাত্রলীগ কর্তৃক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের চাক্ষুষ প্রমাণ পায় প্রশাসন। এই ঘটনায় অধিকতর তদন্তের জন্য দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
গত নভেম্বর মাসে ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মো. শাহ আলম মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মো. আনসার আলী নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে। এছাড়াও গত ৫ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জামাল হোসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতিকে সালাম না দেওয়ায় মাকসুদুল হক ইমু নামের এক শিক্ষার্থীকে রাতভর হলের এক কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এই ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। গত ২১ অক্টোবরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের গেস্টরুমে ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ও মারামারির সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আবুল বাশার মিরাজকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। এক্ষেত্রেও বিশ^বিদ্যালয়ের কোনো অগ্রগতি নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভয় পায়। প্রশাসনের ব্যর্থতা এবং স্বেচ্ছাচারিতায় এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল হক বলেন, এসব ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা আছে। বিষয়টি বোর্ড অব রেসিডেন্স এন্ড ডিসিপ্লিনের সভার মাধ্যমে করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।