ময়মনসিংহ লাইভ ডেস্ক : ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় জমি নিয়ে বিরোধে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাপরাধ মামলার স্বাক্ষী আব্দুল হাকিম(৬৫)কে মারধর ও লাঞ্ছিত করেছে প্রতিপক্ষ। আহত মুক্তিযোদ্ধা মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। ঘটনার ৫ দিনেও হামলা নেয়নি থানা পুলিশ। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। এনিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বাহেঙ্গা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে চলমান একটি যুদ্ধাপরাধ মামলার স্বাক্ষী আব্দুল হাকিমের জমি নিয়ে তার নিজ পুত্র মুখলেছ আলী এবং স্থানীয় একটি চক্রের সাথে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এর জেরে গত শনিবার আব্দুল হাকিম বাড়ি থেকে বের হলে তার ছেলের সম্পৃক্ততায় প্রতিপক্ষ ফারুক, আবুল কালাম আজাদ, হাবিবুর রহমান হাফিজ, ফাতেমসহ ৮/১০ জন মিলে তাকে গালাগাল ও লাঞ্ছিত করে। পরে তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে তাকে বেধড়ক মারধর করে। পরে স্থানীয় কয়েকজন মিলে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্ষে ভর্তি করে। এ নিয়ে থানায় মামলা করতে গেলে ওসি নানান টালবাহানা দেখিয়ে মামলা নেননি বলে ভিকটিম মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম অভিযোগ করেন।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবুল কাসেম জানান, আব্দুল হাকিম একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আদালতে চলমান একটি যুদ্ধাপরাধ মামলার অন্যতম স্বাক্ষী। যুদ্ধাপরাধের মামলায় বিচারাধীন আসামীদের স্বজনরা তার ওপর চরমভাবে ক্ষুদ্ধ। যুদ্ধাপরাধীদের লোকজন মিলে তাকে মারধর করেছে। আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি কিন্তু তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। থানার ওসিও টালবাহানা করে মামলা নিচ্ছেন না। দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া না হলে মুক্তিযোদ্ধারা আন্দোলনে নামবে বলেও তিনি জানান।
মুক্তাগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, ঘটনা জেনেছি। ঘটনাটি মূলত মুক্তিযোদ্ধা হাকিম সাহেবের নিজ ছেলের সঙ্গে। তিনি থানায় কোন লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে নিয়মিত মামলা নিয়ে নেয়া হবে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা হয়েছে। আমরা ঐ ছেলেকে ধরে আনবার চেষ্টা করছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবর্ণা সরকার বলেন, ঘটনা জানার পর আমি তাদেরকে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছি। থানা পুলিশকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি। তারা এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলেই আইনানুগ ব্যবস্থা হবে।