স্টাফ রিপোর্টার : কিশোরগঞ্জে স্থানীয় এমপির বডিগার্ড হিসেবে পরিচিত ভয়ংকর সন্ত্রাসী ও বাজিতপুর উপজেলা যুবলীগের নামধারী নেতা মো. পারভেজকে অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে বাজিতপুর থানা পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, মোটরসাইকেল চুরি, দখলবাজি ও প্রতারণাসহ এমন কোনো অপরাধ নেই যা করেনি এ পারভেজ। এক সময় মোটরসাইকেল চুরির ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ হিসেবে বাজিতপুর থানায় টানানো অপরাধীদের ছবির সঙ্গে তার ছবিও ছিল। কয়েকটি মামলায় দীর্ঘদিন ধরে গ্রেফতারি পরোয়ানাও ছিল তার বিরুদ্ধে। কিন্তু যুবলীগের লেবাস ধারণ করে স্থানীয় সরকারদলীয় এমপি আফজাল হোসেনের বডিগার্ড বনে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ভয়ে মুখ খোলার সাহস পায়নি কেউ।
শুধু তাই নয়, তার দোর্দণ্ড রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ অপরাধী হিসেবে টাঙানো ছবি নামিয়ে ফেলে গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত পারভেজকে ফেরার দেখায় পুলিশ। কিন্তু আদালতের নির্দেশ এবং ওয়ারেন্ট তামিলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের একের পর এক তাগিদের কারণে তাকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয় পুলিশ।
এক ভুক্তভোগী বলেন, স্থানীয় এমপির মোটরসাইকেল চালায় সে। এলাকার বিভিন্ন স্থানে এমপিকে মোটরসাইকেলে বহন করে নিয়ে যায়। এমপির প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিল সে। কিন্তু প্রাণের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। তাকে চাঁদা না দিয়ে ভাগলপুর এলাকায় কেউ জমি ক্রয়-বিক্রয়, এমনকি বাসাবাড়িও তৈরি করতে পারত না। এভাবে সে অঢেল সম্পদের মালিক বনে যায়।
জানা গেছে, সন্ত্রাসী পারভেজ বাজিতপুর উপজেলার সরারচর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পশ্চিম ভাগলপুর গ্রামের আলী আকবরের ছেলে। তার গ্রেফতারের খবরে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী উল্লাস প্রকাশ করেছেন। অনেকে একে অপরকে মিষ্টি মুখও করিয়েছেন।
বাজিতপুর থানার ওসি মো. খলিলুর রহমান পাটোয়ারি বলেন, ১৬ লাখ টাকা চেক জালিয়াতি মামলায় পারভেজের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের ৬ মাসের সাজা ও অর্থদণ্ড এবং কিশোরগঞ্জের একটি নারী নির্যাতন মামলায় তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে গ্রেফতারি পরোয়ানা পেন্ডিং ছিল। এছাড়া সে পিবিআইর হাতে তদন্তাধীন পিস্তল চুরির মামলায়ও সন্দিগ্ধ আসামি।
তিনি জানান, শনিবার দুপুরে তাকে কিশোরগঞ্জের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাজিতপুর থানায় এক সময় মোস্ট ওয়ান্টেড আসামি হিসেবে পারভেজের ছবি টানানো থাকার কথাও স্বীকার করেন ওসি খলিলুর রহমান পাটোয়ারি।
এ বিষয়ে জানতে স্থানীয় সরকারদলীয় এমপি আফজাল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য না করে পরে কথা বলবেন বলে জানান।