আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন মাহবুবুল আলম হানিফ

মো. আব্দুল কাইয়ুম : আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন শুরু হয়েছে শুক্রবার। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সূত্রগুলো বলছে, দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা পরবর্তী কমিটি প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। সম্মেলন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, আওয়ামী লীগের দলীয় ও সভাপতির কার্যালয় ছাপিয়ে নগরীর রাস্তায়ও সাজ সাজ রব। তুমুল ব্যস্ততা চারদিকে। কেন্দ্রীয় নেতাদের চোখে ঘুম নেই, আছে উৎকণ্ঠা। তবে কারা নতুন নেতা হচ্ছেন, পুরোনো কে কে বাদ পড়ছেন, সে বিষয়ে এখনো সবাই অন্ধকারে। এ জন্য পদপ্রত্যাশী ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা নেতারা উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন। তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ যোগ্য ও দলের জন্য একজন বিশ্বস্ত ত্যাগী নেতা হিসেবেই পরিচিত। দলের হয়ে বিরোধীদের বক্তব্যের জবাব দিতে পারেন এমন নেতাদের মধ্যেও মাহবুবুল আলম হানিফ এগিয়ে রয়েছেন। ত্যাগী ও দলের দুঃসময়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সুখে-দুঃখে দলের সঙ্গে জড়িত থেকে আওয়ামীলীগকে সুসংগঠিত করতে তার অবদান রয়েছে। এদিকে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ হেভিওয়েট নেতাদের উপদেষ্টা পরিষদে যোগ করা হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ২১তম জাতীয় কাউন্সিলে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সংখ্যা ১০ জন বাড়ানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সংখ্যা ছিল ৪১ জন। ১০ জন যোগ হলে উপদেষ্টার সংখ্যা হবে ৫১ জন।

 আওয়ামী লীগের  শীর্ষ কয়েক নেতার ধারণা, বাদ পড়া ও রদবদল মিলে বড় পরিবর্তনের আভাস আছে দলের ভেতরে। ৬৫ বছরের বেশি বয়সী কেউ নতুন করে দলে জায়গা পাবেন না। সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্য থেকে অনেকেই ঢুকতে পারেন এবার। বিতর্কিত ও নিষ্ক্রিয়রা নিশ্চিতভাবেই বাদ পড়বেন। বয়স বিবেচনায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের একটি বড় অংশ এবার বাদ পড়তে পারে। তাদের জায়গা হতে পারে উপদেষ্টা পরিষদে। উপদেষ্টা পরিষদ ইতিমধ্যেই ৪১ থেকে বাড়িয়ে ৫১ করা হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া ১৭ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সম্পাদকদের মধ্য থেকে কেউ কেউ জায়গা পাবেন। বর্তমান কমিটিতে ১৫ জন নারী থাকলেও আগামী কমিটিতে বাড়তে পারে। সম্পাদকীয় এবং নির্বাহী সদস্য পদেও আসতে পারে বড় ধরনের রদবদল।

সম্মেলন প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত সূত্র বলছে, গঠনতন্ত্রে মৌলিক কোনো পরিবর্তন আসছে না। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যসংখ্যা ৪১ থেকে বাড়িয়ে ৫১ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের অর্জনগুলো ঘোষণাপত্রে যুক্ত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা আছে দীর্ঘদিন ধরেই। তবে এবারও শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয় বা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ পরিবারের ঘনিষ্ঠদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আনার কোনো ইঙ্গিত এখনো দেননি দলীয় প্রধান।

এদিকে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ, আলোকসজ্জায় ঝলমল করছে পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। সম্মেলনে সারাদেশ থেকে সাড়ে ৭ হাজার কাউন্সিলর এবং ১৫ হাজার ডেলিগেটসহ ৫০ হাজার নেতাকর্মী ও আমন্ত্রিত অতিথি অংশ নেবেন। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলের সম্মেলনকে ঘিরে সারাদেশেই দলটির মধ্যে ব্যাপক উত্সাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উত্সবের আমেজ।

উল্লেখ্য, মাহবুবুল আলম হানিফ ২ জানুয়ারি ১৯৫৯ সালে কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য এবং ২০১৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে চলতি দায়িত্ব পালন করছেন।

Share this post

scroll to top