এইচআইভি আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদানে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (সিওমেক) চিকিৎসকগণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দীর্ঘদিন ধরে এসব মানুষকে সেবা প্রদান করে আমাদের চিকিৎসকগণ এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ পর্যন্ত ওসমানী হাসপাতালের সেবার আওতায় ৫৬ জন এইচআইভি আক্রান্ত মা সুস্থ সন্তান জন্ম দিয়েছেন। সিলেট বিভাগের এইচআইভি নিয়ে বেঁচে থাকা রোগীরা সারা বছর এই হাসপাতাল থেকে তাদের প্রয়োজনীয় ওষুধ অন্যান্য সেবা নিয়ে থাকেন।
১ ডিসেম্বর বিশ্ব এইডস দিবসের আলোচনা সভায় উপরিউক্ত তথ্য জানান হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. ইউনুছুর রহমান।
দিনের শুরুতে এক বর্ণাঢ্য র্যালি আয়োজন করা হয়। হাসপাতালের পরিচালকের নেতৃত্বে বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, অধ্যাপক, চিকিৎসক, সেবিকাসহ কর্মচারী ও সেবা গ্রহীতাগণ র্যালিতে অংশ গ্রহণ করেন। হাসপাতালের আশেপাশের সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে গোল চত্বরে এসে র্যালিটি শেষ হয়। র্যালি শেষে হাসপাতালের সেমিনার কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ইউনুছুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং পিএমটিসিটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. মোতাহের হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভার শুরুতে হাসপাতালের এইচআইভি কার্যক্রম নিয়ে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আবাসিক চিকিৎসক ডা. আবু নঈম মোহাম্মদ। আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণ করেন রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এফএমএ মো. মুসা চৌধুরী, গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. নাসরিন আক্তার, নবজাতক বিভাগের ডা. মো. আব্দুল হাই মিয়াসহ বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসকবৃন্দ।
হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় তার বক্তব্যে বলেন, সেবাদান কারীদেরকে অবশ্যই বৈষম্যহীনভাবে সেবা প্রদান করতে হবে। বিশেষ করে আমাদের সমাজে যেসব ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী রয়েছে তাদেরকে সেবা আওতায় না আনতে পারলে আমরা কেউই নিরাপদ থাকতে পারব না।
উল্লেখ্য, সিলেটে এ পর্যন্ত সনাক্ত হওয়া এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা ৯৫১ জন । এর মধ্যে মারা গেছেন ৩৯৪ জন। বাকিদের মধ্যে ৫০১ জন সিলেট এমএজিওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মৌলভীবাজার জেলা সদর হাসপাতালে অবস্থিত এআরটি সেন্টার হতে নিয়মিত ওষুধ সেবন করে যাচ্ছেন। সরকারি অর্থায়নে এ রোগীদের মধ্যে ঔষধ এবং অন্যান্য সেবা বিনামূল্যে প্রদান করা হয়ে থাকে। পাশাপাশি এইচআইভি আক্রান্ত মা হতে শিশুর শরীরে এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিরোধের মাধ্যমে এইচআইভির নতুন সংক্রমণ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ইউনিসেফের সহায়তায় এই দুটি হাসপাতালে পিএমটিসিটি প্রকল্প চলমান আছে।