কৃষকরা হতাশ : বাকৃবির উদ্ধাবিত বাউ ধান-৩ এখন প্রাইভেট কোম্পানীর হাতে !

স্টাফ রিপোর্টার :বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ব্লাস্ট প্রতিরোধক নতুন জাতের ধান ‘বাউ-৩’ উদ্ভাবনের পরই তুলে দিয়েছে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এসিআই এর হাতে। এতেকরে সাধারণ কৃষকরা কম দামে নতুন জাতের এ ধান রোপন করতে পারবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশের কৃষকদের স্বার্থে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা নতুন কিছু উদ্ভাবন করবেন এমনটাই আশা করছেন দেশীয় কৃষকরা। এদিকে অতিরিক্ত মুনাফা বা সরকারের স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের গবেষণার ফসল জনগণের জন্য উন্মুক্ত না করে প্রাইভেট কোম্পানীর হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে দেশজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিএডিসিকে পরিমাণ মতো বীজ না দিয়ে এসিআইকে বীজ দেয়ার পেছনে কী উদ্দেশ্য রয়েছে তা নিয়েও চলছে গুঞ্জন।

ময়মনসিংহের গৌরিপুরের কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, দেশে যা উদ্ভাবন হয় তা সবার আগে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চলে যায় প্রাইভেট কোম্পানির হাতে। এতে করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নিজেদের স্বার্থে দেশের উন্নয়নকে বুলণ্ঠিত করতে চায়।

এদিকে, ব্লাস্ট ও লিফব্লাইট প্রতিরোধী ধানের জাতটি দেশে জনপ্রিয় ব্রি ধান-২৮ এর বিকল্প হতে পারে বলে দাবি করেছেন বাকৃবির বর্তমান উপাচার্য গবেষক অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। এজাতের ধানের হেক্টর প্রতি গড় ফলন ৭-৮ মেট্রিক টন, যা ব্রি ধান-২৮ এর চেয়ে ১-২ মে. টন বেশি। উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ এ জাতের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো দানার আকৃতি ব্রি-২৮ এর মতো। পূর্ণবয়ষ্ক একটি গাছ ১১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এ জাতের গড় জীবনকাল ১৪০-১৪৫ দিন যা ব্রি ধান-২৮ এর সমসাময়িক। ১০০০ টি পুষ্ট দানার ওজন প্রায় ২৫ গ্রাম। গাছের কান্ড শক্ত ও মজবুত হওয়ায় গাছ ঢলে পড়ে না। এ জাতের ধান পাকা অবস্থায় শীষ হতে সহজে ঝরে পড়ে না বলে অপচয় কম হয়। এ জাতের পাতা খাড়া, প্রশস্ত ও লম্বা। পাতার রং সবুজ। রান্না করা ভাত ঝরঝরে ও খেতে সুস্বাদু। এই জাতটি আগাম এবং ফলন ব্রি ধান-২৮ এর চেয়ে বেশি হওয়ায় লবাণাক্ত এলাকা ছাড়া হাওড়াঞ্চলসহ দেশের প্রায় সকল অঞ্চলে চাষ করা যাবে।

Share this post

scroll to top