স্মরণীয় টেস্টে বাংলাদেশের হার

সৌরভ গাঙ্গুলির কণ্ঠেও আক্ষেপ ঝরলো। শনিবার তিনি সাংবাদিকদের জানালেন, বাংলাদেশ এতো খারাপ খেলবে আশা করেননি তিনি। কলকাতার ঐতিহাসিক ইডেন গার্ডেনসে দিবা-রাত্রির গোলাপি বলের টেস্ট নিয়ে আয়োজনের কমতি রাখেননি তিনি। পুরো কলকাতায় উৎসবের আমেজ এনে দেন। পাঁচ দিনের সেই উৎসব কি-না তিন দিনেই ভেঙে গেল! তৃতীয় দিন মাত্র ৮.৪ ওভার ব্যাটিং করে বাংলাদেশ মেনে নিল ইনিংস ও ৪৬ রানের বড় হার। কলকাতায় গোলাপি বলে বাংলাদেশ এবং ভারতের প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্টটা দু’দলের কাছেই স্মরণীয়। কিন্তু ফলটা হলো বাংলাদেশের কাছে ভুলে যাওয়ার মতো।

ইডেন গার্ডেনসে প্রথমবার টেস্ট খেলতে নামায় ম্যাচটা বাংলাদেশের কাছে ছিল ঐতিহাসিক। সেই টেস্টের নামের পাশে লেখা হলো ইনিংস পরাজয়। শুধু ইডেনসের টেস্ট নয় এবারের ভারত সফরটাই বাংলাদেশের কাছে ঐতিহাসিক এক সিরিজ। ভারতের প্রথমবার পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলার আমন্ত্রণ পায় বাংলাদেশ। সেই সিরিজের প্রথম টি-২০ ম্যাচে দারুণ এক জয়ে শুরু করে মাহমুদুল্লাহর নেতৃত্বাধীন দল। কিন্তু পরের চার ম্যাচেই হার দেখতে হলো দলের। এর মধ্যে মুমিনুলের নেতৃত্ব দুই টেস্টেই ইনিংস ব্যবধানে হারল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

বাংলাদেশের এই হারের সঙ্গে ভারত এক রেকর্ডও গড়ে ফেলল। টানা চার টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে জয় পাওয়া একমাত্র দল হয়ে গেল তারা। এর আগে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে শেষ দুই টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে জয় পায় বিরাট কোহলি এন্ড কোং। এছাড়া ঘরের মাঠে কোন টেস্টে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেটের ১৯টিই নিয়ে ভারতীয় পেসাররা সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়ল। অধিনায়ক হিসেবে ৩৩ জয় তুলে নিয়ে কোহলি পঞ্চম সেরা টেস্ট অধিনায়ক হয়ে গেছেন।

কলকাতা টেস্টে ইডেন গার্ডেনসের সবুজ উইকেট দেখেও সাহসী সিদ্ধান্ত হিসেবে শুরুতে ব্যাটিং নেয় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ইশান্ত শর্মা-মোহাম্মদ শামিদের তোপে ১০৬ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। এর মধ্যে দুই ব্যাটসম্যান কনকাশন হয়ে মাঠ ছাড়েন। জবাব দিতে নামা ভারত গোলাপি বল কিংবা দিবা-রাত্রির টেস্ট সেসব তোয়াক্কা না করে প্রথম ইনিংসে দারুণ ব্যাটিং করে। ৯ উইকেট হারিয়ে তারা তুলে ফেলে ৩৪৭ রান। এরপর ৫৮ রানে হুট করে ৫ উইকেট হারায়। কন্ডিশনের সুযোগ নিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ভারত। ২৪১ রানের লিড নিয়ে ঘোষণা করে প্রথম ইনিংস।

দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ সেই রান করতেই কুপোকাত। ফ্লাডলাইটের নিচে প্রথমবার গোলাপি বলে ব্যাট করতে নেমে ১৩ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে আর উঠতে পারেনি। অলআউট হয়ে যায় ১৯৫ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৪ রান করেন মুশফিকুর রহিম। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৯ রান করে দ্বিতীয় দিনই হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়া মাহমুদুল্লাহ। এর আগে সাদমান ইসলাম এবং মুমিনুল হক শূন্য রানে আউট হন। ইমরুল কায়েস ও মোহাম্মদ মিঠুন যথাক্রমে ৫ ও ৬ রান করে ফিরে যান। আল-আমিন করেন ২১ রান।

ভারতের হয়ে প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেটসহ কলকাতা টেস্টে নয় উইকেট নিয়েছেন ইশান্ত শর্মা। উমেশ যাদব দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেটসহ তুলে নিয়েছেন আট উইকেট। মোহাম্মদ শামি নেন বাকি দুই উইকেট। বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ইনিংসে ইবাদত হোসেন এবং আল আমিন হোসেন তিনটি করে উইকেট নেন। আবু জায়েদ দুটি এবং তাইজুল ইসলাম নেন এক উইকেট।

Share this post

scroll to top