ঈশ্বরগঞ্জে মা’কে শিক্ষকের চড়-থাপ্পর : ছাত্রীর আত্নহত্যার চেষ্টা

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে শিক্ষকদের নীতিবিরোধী কাজের প্রতিবাদ করতে গিয়ে অপমানসহ মারধোরের শিকার হয়েছেন এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মা। সোহাগী ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ এর শিক্ষকদের হাতে মা নূরজাহান বেগমের লাঞ্চিত ও মারধোরের খবর পেয়ে বেশ কয়েকবার আত্নহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় পরীক্ষার্থী মুক্তা। অপরদিকে বিষয়টি নিয়ে বেশি মাতামাতি করলে গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিয়েছেন কৃষকলীগ নেতা ও স্কুলটির অফিস সহকারী আবুল কালাম আজাদ। এ ঘটনায় সমগ্র ঈশ্বরগঞ্জ জুড়ে চলছে নানা রকম ক্ষোভ ও প্রতিবাদ।

অভিযোগে জানা যায়, স্থানীয় বগাপুতা গ্রামের বাবুল মিয়ার মেয়ে মুক্তা সোহাগী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে পরপর ২ বার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হয়। কিন্তু তার ইচ্ছে শক্তি থেমে যায়নি। ৩য়বার একই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ দেয়নি মুক্তাকে। পরে মুক্তা আরেকটি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদিকে মুক্তার মতো ২য় বার অকৃতকার্য হওয়া অন্যান্য শিক্ষার্থীকে সোহাগী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে ৩য় বারের মতো এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেয় অধ্যক্ষ। অন্যান্যদের সুযোগ দিলেও নিজের মেয়েকে কেন তার পছন্দের সোহাগী স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে দেয়া হয়নি তা জানতে গতকাল রোববার সোহাগী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ও স্কুলে যান মুক্তার মা নূরজাহান বেগম। দুপুর ২টার দিকে সোহাগী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে গিয়ে অধ্যক্ষকে বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞেস করলে অফিস সহকারী স্থানীয় কৃষকলীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ কথার এক পর্যায়ে মুক্তার মা নূরজাহানকে অফিস থেকে ঘাড় ধরে বের করে দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু মুক্তার মা এর সঠিক কারণ জেনে বাড়ি ফিরবেন বলে জানালে মুক্তার মা’কে মারধোর শুরু করেন আবুল কালাম আজাদ। এক পর্যায়ে নূরজাহানের মাথায় ও কানে আঘাত করে আবুল কালাম আজাদ। সাথে সাথেই গুরুতর আহত হয়ে যান নুরজাহান বেগম। পরে বিষয়টি নিয়ে মামলা করতে গেলে সোহাগী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বণিক বাবু বিচারের আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন লোকজনের মাধ্যমে ভিকটিম পরিবারকে থামান।

এদিকে বাবুল মিয়া জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের ভাই এই আবুল কালাম আজাদ ও তার বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় কালাম তার ব্যক্তিগত আক্রোশে প্রভাব কাটিয়ে মুক্তাকে সোহাগী ইউনিয়ন ইচ্চ বিদ্যালয়  কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে সুযোগ দেয়নি। মা’কে অপমান ও  মারধোর করায় তার মেয়ে মুক্তা বেশ কয়েকবার আত্নহত্যার চেস্টা করেছে বলেও জানান তিনি।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে রুমানা তুয়ার সাথে মুটোফোনে বারবার যোগাযোগের চেস্টা করেও কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Share this post

scroll to top