জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবালের ওপর কথিত হামলার বিরুদ্ধে অজ্ঞাতনামা মামলা দায়ের করেছে জাবি প্রশাসন। এরই প্রতিবাদে যেকোনো সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘উপাচার্য অপসারণ মঞ্চ’-এ অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের সমন্বয়কারী অধ্যাপক রায়হান রাইন এ ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ ভিসির অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অবরোধ ও সর্বাত্মক ধর্মঘট কর্মসূচী চলবে। যেকোনো সময় ভিসিকে আমরা অবরুদ্ধ করবো। হামলা-মামলা করে যৌক্তিক এ আন্দোলনকে দমানো যাবেনা।
কয়েকদিন আগে আন্দোলনকারী কিছু শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবালের উপর হামলা করেছে, এমন অভিযোগ এনে গত শুক্রবার রাতে অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এবিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলেন, প্রশাসন আন্দোলনকে দমাতে অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জনের নামে মামলা করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরো বলেন, গত ৩০ অক্টোবর আমাদের ধর্মঘট কর্মসূচী চলাকালে দু’জন আন্দোলনকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো কলা ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। সেখানে সহকারী প্রক্টর তার বিভাগের কিছু অনুগত ছাত্রদের নিয়ে আমাদের দুই আন্দোলনকারীকে হেনস্থা করেন।
আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয়কে টেনে মাটিতে ফেলে দেয়া হয়। ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আন্দোলনকারীকে মাটিতে ফেলে সহকারী প্রক্টর শৈবাল সুস্থভাবে হেটে যাচ্ছেন। দু’জন আন্দোলনকারী শৈবালের হামলার শিকার হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিলর্জ্জনের মতো অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জনের নামে মামলা করেছে। যার মাধ্যমে প্রমাণ হয় এই ভিসি আন্দোলনকে দমাতে এই গায়েবী মামলা দায়ের করেছেন।
দায়েরকৃত মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আন্দোলনকারী নজির আমিন চৌধুরী জয় শিক্ষার্থীদের রোষানলে পড়লে সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবাল তাকে উদ্ধার করতে যান। এসময় আন্দোলনকারীরা সহকারী প্রক্টরকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ৪০-৫০ জন আন্দোলনকারী সহকারী প্রক্টরকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার পুরুষাঙ্গে সুক্ষ্ম ধারালো কোনো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে। উক্ত আঘাতের ফলে রক্তপাত ও গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকট নিরসনে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক।