একাত্তরে রংপুরের আলবদর বাহিনীর কমান্ডার ও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকার রায় আসার পর গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে এসে তার সঙ্গে দেখা করে গেলেন আইনজীবীরা। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে পাঁচজন আইনজীবীর একটি দল কারাগারে এসে আজহারের সঙ্গে দেখা করেন।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের জেলার বিকাশ রায়হান জানান, তারা ১৫ মিনিটের মতো ছিলেন। আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করার বিষয়ে তাদের কথা হয়েছে। আজহারুল ইসলাম তাতে সম্মতি দিয়েছেন বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন। তবে রায়ের পর পরিবারের কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে আসেননি বলে জানান জেলার।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ টি এম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। পাশাপাশি তাকে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তার সেই সাজা বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
এ টি এম আজহারুল ইসলাম একাত্তরে ইসলামী ছাত্রসংঘের জেলা কমিটির সভাপতি ছিলেন। সে সময় তার নেতৃত্বেই বৃহত্তর রংপুর এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, নির্যাতন, বাড়িঘরে লুটপাট-অগ্নিসংযোগসহ বর্বরতা চালানো হয়। রায়ে তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে পাঁচটি এবং পরিকল্পনা-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা চালিয়ে অন্তত ১৪০০ লোককে হত্যা এবং নিজেই ১৪ জনকে খুনের অপরাধে তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
ট্রাইব্যুনালের দেওয়া এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি ১১৩ যুক্তিতে খালাস চেয়ে ২ হাজার ৩৪০ পৃষ্ঠার আপিল করেন দণ্ডিত এই যুদ্ধাপরাধী। এরপর ২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট এক আদেশে আপিল বিভাগ আসামিপক্ষকে সারসংক্ষেপ দাখিলের নির্দেশ দেন। দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকার পর গত ১৮ জুন সর্বোচ্চ আদালতে এ মামলার শুনানি শুরু হয়ে ১০ জুলাই শেষ হয়।