ঢাকাThursday , 31 October 2019
  1. Correspondent
  2. English News
  3. আজকের ময়মনসিংহ
  4. আদালত
  5. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  6. ইসলাম ও জীবন
  7. এক্সক্লুসিভ ময়মনসিংহ
  8. করোনা আপডেট
  9. করোনায় সহযোগীতা
  10. খেলার সংবাদ
  11. চাকুরী
  12. ছবি গ্যালারী
  13. জাতীয় অহংকার
  14. জাতীয় নির্বাচন ২০১৮
  15. জাতীয় সংবাদ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদ নিয়ে এক রহস্যময় গল্প

Link Copied!

ময়মনসিংহের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদ ছিল প্রধান নদ-নদীগুলোর একটি। এ নদের বিস্তৃতি ও অববাহিকা তিব্বত, চীন, ভারত ও বাংলাদেশে বিদ্যমান। এর উৎপত্তি মানস সরোবর লেক ও কৈলাশ পর্বতের মাঝস্থান থেকে। উৎপত্তিস্থল থেকে ব্রহ্মপুত্রের দৈর্ঘ্য দুই হাজার ৮৫০ কিলোমিটার। নদটি ভবানীপুর এলাকায় কুড়িগ্রাম জেলার উত্তর-পূর্ব দিক দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এরপর বাহাদুরাবাদ ঘাটের প্রায় ১২ কিলোমিটার উজানে গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার হরিচণ্ডি হয়ে জামালপুর ও ময়মনসিংহের দিকে এসে কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজারের কাছে মেঘনা নদীতে মিশেছে। এটিই এখন পুরনো ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত।

ব্রহ্মপুত্র একসময় বিশাল স্রোতধারা নিয়ে ছিল দেশের গুরুত্বপূর্ণ নদ। আজকের চঞ্চলা যমুনা নদীও ছিল ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদী। মূলত ১৭৮৭ সালের আগে যমুনা নামে কোনো নদী ছিল না। ছিল শীর্ণকায় খাল। যার নাম জানুয়া বা জিনুয়া। ১৭৮৭ সালে ভূমিকম্পের ফলে ব্রহ্মপুত্রের স্রোতধারা দেওয়ানগঞ্জের কাছে এসে ওই শীর্ণকায় খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়। সেটিই আজকের যমুনা নদী। এদিকে জামালপুর, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ জেলা হয়ে মেঘনায় পতিত হওয়া মূল স্রোতটিই পুরাতন ব্রহ্মপুত্র।

ব্রহ্মপুত্রের মাহাত্ম্য নিয়ে হিন্দু ধর্মান্ধে একটি পৌরাণিক গল্প আছে। পুরাণে আছে, মহামুনি জমদাগ্নির আদেশে পুত্র পরশুরাম মাতৃহত্যা করে মহাপাপ করেছিলেন। যে কুঠার দ্বারা তিনি মা রেণুকাকে হত্যা করেছিলেন, সেই কুঠার তাঁর হাতে আটকে গিয়েছিল। প্রাণপণ চেষ্টা করেও সে কুঠার তিনি হাত থেকে ছাড়াতে পারেননি। অবশেষে তিনি গভীর দুঃখ ও অনুশোচনায় নিমজ্জিত হলেন এবং ধ্যান-তপস্যায় পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন। হঠাৎ তিনি ব্রহ্মপুত্রের মাহাত্ন্যের কথা শুনে তার খোঁজে বেরিয়ে পড়লেন। ব্রহ্মপুত্র তখন হ্রদরূপে হিমালয় পর্বতে আত্মগোপন করছিল। তিনি বহু বছর ধরে হিমালয়ের জনমানবহীন দুর্গম পথে-প্রান্তরে নিষ্ফল ঘুরতে থাকায় তার চোখের সামনে থেকে এক অশুভ প্রভাবের কুজ্ঝটিকা অপসৃত হলো। তিনি দেখতে পেলেন নিম্নদেশে প্রসারিত এক হ্রদ। পরশুরাম আনন্দে আত্মহারা হয়ে দুই হাত তুলে বললেন, ‘হে হ্রদরূপী দেবতা, তোমার পবিত্র জলে মরজগতের কোনো পদার্পণ হয়নি। তোমার সকল অলৌকিক শক্তি মিলিত হয়ে আমার সকল পাপ ধৌত করে দিক এবং আমার প্রায়শ্চিত্তের অবসান হোক।’ এ কথা বলে পরশুরাম জলে ঝাঁপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর হাতের কুঠারটি ছুটে গেল। তিনি দিব্যচক্ষু ফিরে পেলেন। বুঝতে পারলেন, তাঁর প্রায়শ্চিত্ত শেষ হয়েছে। মহাগুণসম্পন্ন সর্বপাপহর এই পবিত্র জল মর্ত্যের মানুষের নাগালে পৌঁছে দেওয়ার মানসে পরশুরাম তাঁর হাতের কুঠার লাঙলাবদ্ধ করে পর্বতের মধ্য দিয়ে চালনা করলেন। যাতে সেই লাঙলের ফলায় তৈরি পথে ব্রহ্মপুত্র সমভূমিতে প্রবাহিত হতে পারে। এভাবে বহু দিন পর বর্তমান নারায়ণগঞ্জ জেলার লাঙ্গলবন্ধ এসে লাঙলখানা আটকে গেল। পরশুরাম বুঝতে পারলেন, তাঁর উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। অতঃপর তিনি এ নদীর মাহাত্ম্য প্রচারে নেমে পড়লেন। কিন্তু যেখানে ব্রহ্মপুত্র এসে থেমে গেল, এর পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল চঞ্চলা অনিন্দ্য সুন্দরী শীতলক্ষ্যা। বিশাল শক্তিশালী ব্রহ্মপুত্রের কাছে শীতলক্ষ্যার রূপের কথা পৌঁছে গেল। ব্রহ্মপুত্র সুন্দরী শীতলক্ষ্যাকে দেখার জন্য স্রোতের প্রচণ্ড আঘাতে দুই কূল ভেঙে ধাবিত হলো সুন্দরী শীতলক্ষ্যার দিকে। বিশাল বপু ও প্রবল শক্তিশালী ব্রহ্মপুত্রকে দেখে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে শীতলক্ষ্যা তার সব রূপ লুকিয়ে ফেলে এক বৃদ্ধার রূপ ধারণ করে নিজেকে বুড়িগঙ্গা নামে উপস্থাপিত করল। ব্রহ্মপুত্র তার রূপের অবস্থা দেখে ভীষণভাবে আশাহত হয়ে চিৎকার করে বলে উঠল : ‘হে বৃদ্ধা নারী, কোথায় সেই যৌবনা শীতলক্ষ্যা?’ অবগুণ্ঠনবতী লক্ষ্যা মৃদু ভাষায় জবাব দিল, আমিই সেই লক্ষ্যা। ব্রহ্মপুত্র দ্রুত ধাবিত হয়ে তার অবগুণ্ঠন ছিঁড়ে ফেলল। ব্রহ্মপুত্র লক্ষ্যাকে দেখে মুগ্ধ হয়ে গেল। ওখানেই তাদের মিলন হলো। ব্রহ্মপুত্র আর শীতলক্ষ্যার পানি এক স্রোতে মিশে গেল। তারই একটি স্রোত বয়ে চলেছে বুড়িগঙ্গা নাম ধারণ করে। হিন্দুদের কাছে ব্রহ্মপুত্রের জল অতি পবিত্র বিবেচিত হয়ে থাকে। সেই কারণে চৈত্র মাসের শুক্লাষ্টমীর দিন নদে স্নান করলে সব পাপ বিনষ্ট হয়।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।