মো. আব্দুল কাইয়ুম : সফল উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন লালন করছেন কিন্তু বিনোয়েগের অভাবে সমস্ত পরিকল্পনা আজ ভেস্তে যাচ্ছে তরুণ উদ্যোক্তা মুকিমের। নিজ জেলার যুব সমাজকে কর্মমুখী করতে তার বেশ কিছু উদ্যোগ এবং কার্যক্রম অব্যাহত রাখলেও বিনিয়োগের কারণে থমকে যেতে হচ্ছে মুকিমকে। কিছুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে তরুণ উদ্যোক্তা মুকিমকে নিয়ে মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হয়। আর এথেকে গোটা ময়মনসিংহে আলোরিত হন মুকিম। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মুকিমুজ্জামান তালুকদার মুকিম উদ্যোক্ত হিসেবে নতুন হলেও তার ছোট ব্যবসা, কাজের প্রতি আগ্রহ আর রয়েছে অসীম চেষ্টা। তিনি তার স্বপ্নের বাস্তবায়ন করে বদলে দিতে চান সম্পূর্ণ ময়মনসিংহ জেলাকে। সেজন্য তাকে অর্থাভাবে মুখোমুখি হতে হচ্ছে অসীম চ্যালেঞ্জের।
মুকিম জানান. দেশের তরুন প্রজন্মের মধ্যে চাকুরি খোঁজার যে প্রবণতা দেখা যায় তা থেকে নিজেদের মেধা মননকে কাজে লাগিয়ে ময়মনসিংহের তরুন-যুবকদের প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তা তৈরিতে তার আপ্রাণ চেষ্টা ও একঝাঁক স্বপ্ন রয়েছে। যার বাস্তবায়ন করতে পারলে ডিজিটালাইজেশন পদ্ধতিতে ময়মনসিংহে বেকারত্ব হ্রাস পাবে। তার প্ল্যানের কারণে তরুণ উদ্যোক্তারা নিজেদের উদ্ভাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে বড় ভূমিকা রাখবে।
মুকিমুজ্জামন তালুকদারের সাথে (০১৭২১৫০৪৭৩৭ নাম্বারে)কথা বলে জানা গেছে, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে যুবকদের বেকারত্ব নিরসনে বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। তার প্রস্তাবিত প্রজেক্টগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- ১) ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আইটি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করা, ২) এ্যাপস ভিত্তিক অনলিইন ব্যবসা যেমন- মেডিকেল হোম ডেলিভারী ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য হোম ডেলিভারী, ৩) পরিবেশ বান্ধব ইট তৈরি,৪) অর্গানিক ফুড উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাত করণ ও বিপনন ৫) পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি উৎপাদন এবং গ্যাস প্রক্রিয়াজাত করন ৬) সমবায় সমিতিরি মাধ্যমে মাইক্রো ক্রেডিট কার্যক্রম পরিচালনা, ৭) পরিবেশ বান্ধব প্লাস্টিক পন্য উৎপাদন ৮) শিশুদের নিরাপদ খাদ্য। তবে তিল তিল করে ড্রিংকিং ওয়াটার ( জার পানি) ও ডেইরি খামার প্রকল্পটি চলমান রেখেছেন।মেধা,শ্রম,বুদ্ধি আর অদম্য ইচ্ছাশক্তি সঠিকভাবে প্রয়োগের চেস্টা থাকলেও শুধুমাত্র উন্নত প্রশিক্ষণ ও মাঠ পর্যায়ে জনবলের চাহিদা পূরণের জন্য বারবার হোচট খেতে হচ্ছে মুকিমকে। তার পরিকল্পনা সবগুলোই আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। নিজের মত মানুষ খুঁজে পাওয়া সহজ, কিন্তু নিজের চেয়ে ব্যতিক্রম মানুষ যারা কিনা ভিন্ন বিষয়ে দক্ষ, তাদের খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন একটি কাজ। আর এই কঠিন কাজটি মুকিমের জন্য সহজ করে দিতে পারেন সফল ব্যক্তিরা, যারা একটা নির্দিষ্ট অঞ্চলকে বদলে দিতে চান, একটি অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করেন।
উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন কেন দেখছেন এমন প্রশ্ন করলে মুকিমুজ্জামান তালুকদার বলেন, পরমুখাপেক্ষী হয়ে না দাঁড়িয়ে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। কে চাকরি দিলো-তা না বরং নিজের উদ্যোগ নিয়ে এমন কিছু করতে হবে যেন একজন উদ্যোক্তা হয়ে আরও অনেক মানুষকে চাকরি দিতে পারি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য শুনার পর থেকে আমার স্বপ্ন একটাই, আমার নিজ জেলা ময়মনসিংহকে বেকার মুক্ত করা। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য শুনার পর থেকেই আমার পরীকল্পনাগুলো বাস্তবে রূপ দিতে স্থানীয় জেলা প্রশাসকের কাছে সাক্ষাৎ করতে বহুবার গিয়েছি। সর্বশেষ গত ৫ মাস আগেও সাক্ষাতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসেছি জেলা প্রশাসকের দরজা থেকে। তখন জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস।
নিজের উদ্যোগকে বাস্তবায়ন করতে বিভিন্নভাবে প্রচেস্টা চালালেও চলতি পথে বারবার থমকে যেতে হচ্ছে মুকিমকে। বেকারদের কর্ম সংস্থানের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে বারবার হোচট খেয়েও থেমে থাকতে রাজি নন তিনি। স্বপ্নকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে পথ চলা শুরু হলেও প্রশিক্ষণ ও অর্থাভাবে থমকে যেতে হচ্ছে স্বপ্নবাজ এ উদ্যোক্তার। তবুও থেমে থাকতে চায়না তার স্বপ্ন। অপরদিকে ময়মনসিংহের বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে তার রয়েছে একঝাঁক পরিকল্পনা। কিন্তু সেসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দরকার আরেকজন স্বপ্নবাজ মানুষের সার্বিক দিক নির্দেশনা।
চাকরির জন্য লোকজনকে ধরাধরি করা শিক্ষিত লোকজনের জন্য অবমাননাকর। তাই শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের নিজেদেরই উদ্যোক্তায় পরিণত হয়ে অন্যের জন্যও কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে তথ্য প্রযুক্তি খাতে ময়মনসিংহে বিপ্লব ঘটাতে তার সুদূর প্রসারী চিন্তা ময়মনসিংহবাসীর জন্য নি:সন্দেহে আশীর্বাদ স্বরূপ। সেজন্য জেলা প্রশাসনসহ সরকারের উর্দ্ধতনমহলকে উদ্যোক্তা মুকিমের পাশে দাঁড়ানোর এখনই সময়।