রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভিসি অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের জয় হিন্দ স্লোগান ও প্রোভিসির চাকরিপ্রত্যাশীর সাথে ফোনালাপ ফাঁসে তাদের অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ করেছে প্রগতিশীল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বুধবার পৃথক পৃথক কর্মসূচিতে এ দাবি জানান তারা।
এদিন বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ‘স্বাধীনতাবিরোধী ও দুর্নীতিবাজ প্রশাসনের অপসারণ চাই’ ব্যানারে প্রগতিশীল শিক্ষকরা জড়ো হয়ে শহীদ তাজ উদ্দিন সিনেট ভবনের সামনে এসে মানববন্ধন করে। পরবর্তীতে মানববন্ধন শেষে ক্যাম্পাসে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ।
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, যখন দেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স তখন রাবি ক্যাম্পাস দুর্নীতিতে জর্জরিত। আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যে প্রোভিসির দর-কষাকষির ফোনালাপ ফাঁসে তা প্রমাণিত হয়েছে। এটি শুধুমাত্র একটি দুর্নীতির নমুনা।
এরপরও বৃহৎ এ প্রতিষ্ঠানে কি করে প্রোভিসির চেয়ারে বহাল থাকেন সেটাও বোধগম্য নয়। রাবিকে দুর্নীতি মুক্ত দেখতে চাই। এ জন্য ইউজিসি ও শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। একই সঙ্গে অনতিবিলম্বে ভিসি প্রোভিসির পদত্যাগ দাবি করেন তিনি। অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষক সমাজ আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি যে ‘জয় হিন্দ’ স্লোগান দিয়েছেন এটা রাষ্ট্রদোহীতার শামিল। জয় হিন্দ শব্দ ব্যবহার করে দেশের ত্রিশ লাখ শহীদের সাথে বেঈমানি করেছেন। ভিসিকে জনসম্মুখে ক্ষমা চেয়ে অতি দ্রুত পদত্যাগের দাবি জানান। এসময় বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেছেন প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ।
এ সময় প্রগতিশীল শিক্ষকদের মানবন্ধনে আইন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, সাবেক ডিন অধ্যাপক মামুনুর রশীদ তালুকদার, অধ্যাপক শাহরিয়ার হোসেন, সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি এক্রাম উল্লাহ, সঙ্গীত বিভাগের সাবেক সভাপতি অমিত রায়সহ শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে একই দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেছে অনিয়ম ও দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষার্থীরা। এসময় ‘দুর্নীতিমুক্ত ক্যাম্পাস চাই’, ‘দুর্নীতির আস্তানা ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘একদফা এক দাবি ভিসি প্রোভিসির পদত্যাগ চাই’, ‘ভারতের দালালেরা হুশিয়ার সাবধান’, ‘স্বজন প্রীতির আস্তানা ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ঘুষ খোর প্রোভিসি পদত্যাগ পদত্যাগ’, ‘চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে আগুন জ্বালাও একসাথে’, ‘শিক্ষা সন্ত্রাস এক সাথে চলে না চলে না’ ভিসি প্রোভিসির পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন ফেস্টুন ব্যবহার ও স্লোগান দিতে থাকে শিক্ষার্থীরা।